প্লাস্টিক, থার্মোকল এড়াতে এবার হাতিয়ার মুখোশ! তাই সুদূর পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি পাহাড়ের চড়িদা গ্রাম থেকে বয়ে আনা হয়েছে কয়েকশো মুখোশ। সবটাই কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। তুলির নিখুঁত টানে দেবদেবী, অসুরের আদলে মুখোশ। জঙ্গলমহল উজিয়ে আনা মুখোশ দিয়ে সাজানো মণ্ডপকে সামনে রেখেই ফের পুজোয় পরিবেশ-ভাবনাকে সামনে রাখছে হাকিমপাড়ার অরুণোদয় সঙ্ঘ। ক্লাবের সম্পাদক আশিস কুমার ঘোষ বলেন, “পরিবেশ-ভাবনাকে আমরা বরাবর অগ্রাধিকার দিই। শহরবাসীর কাছে তা সমাদৃত হয়। এবারও সেই চেষ্টা করেছি। কাগজের মুখোশ দিয়ে মণ্ডপ হচ্ছে। কাগজ দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমাও।”
ঘটনাচক্রে ওই পুজোর নেপথ্যে রয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর সুজয় ঘটক। প্রসঙ্গত, সুজয়বাবু পরিবেশ এবং সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ থাকাকালীন শিলিগুড়িতে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের অভিযান জোরকদমে শুরু হয়। শিলিগুড়িকে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ মুক্ত শহর বলে ঘোষণাও হয়। ইদানিং চোরাগোপ্তা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার শুরু হয়েছে শহরে। ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের একাংশ শহরকে দূষিত করতে চাইলেও সিংহভাগ নাগরিক তা বর্জন করেছেন। তাই সুজয়বাবু বলেন, “আমাদের থিম হল দূষণ মুক্ত পরিবেশ। সে জন্য পুজোয় প্লাস্টিক, থার্মোকল কার্যত ব্যবহার করা হয় না। ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।” পাশাপাশি, তিনি জানান, আড়াল থেকে একটি চক্র প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ চালানোর চেষ্টা করলেও শহরের মানুষ তা প্রতিরোধ করবেন।
ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুরের শিল্পীরা এক মাস ধরে মণ্ডপ তৈরি করেছেন। ‘ছৌনাচ’-এ ব্যবহৃত মুকোশ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে গোটা মণ্ডপটি। মণ্ডপ জুড়ে রয়েছে কয়েকশো মুখোশ। কোনটা দেবদেবীর মুখের আদলে আবার কোনটা অসুরের মুখ। ছৌনাচে এ গুলি ব্যবহার করা হয়। মেদিনীপুরের শিল্পীরাই পুরুলিয়া থেকে মুখোশগুলি সংগ্রহ করেছেন। শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বলাইদাস চট্টোপাধ্যায় রোডে অরুণোদয় সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপ। এ বছর তাদের পুজো ৫১ বছরে পড়ল। |