তৃণমূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাশের পর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। সোমবার সন্ধ্যায় সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশের রিপোর্ট জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক। ৩ দিনের মধ্যে তা পাঠানোর নিয়ম। ওই চিঠি পাওয়ার ৫ দিনের মধ্যে দার্জিলিঙের জেলাশাসককে নতুন সভাধিপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেবেন বিভাগীয় কমিশনার। শুক্রবার থেকেই পুজোর ছুটি শুরু হবে। তার আগে হাতে দু’ দিন রয়েছে। তার মধ্যে সেই নির্দেশ পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পর ১ মাসের মধ্যেই সভাধিপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা।
সিপিএমের তরফে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে। সিপিএমের তরফে থাকা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এ দিন ওই মামলার শুনানিতে সোমবার অনাস্থা পাশের ঘটনা হলফনামা দিয়ে সরকারের তরফে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি পাসকেল মিন্জ অথবা কর্মাধ্যক্ষদের কাউকে দেখা যায়নি। মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা আইনূল হক-সহ ৩ জন সদস্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আইনুলবাবু এ দিন মহকুমা পরিষদে ১০ মিনিট থেকে কয়েকজন আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে চলে যান। পুজোর মুখে এই পরিস্থিতিতে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন অনেকেই। বিশেষ করে ঠিকাদারদের একাংশ যারা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের বকেয়া টাকা পাবেন। অন্য দিকে ক্ষমতা হাত বদলের মুখে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতেও তৎপর হয়েছেন অনেকে। প্রসঙ্গত, বাম আমলেই গ্রামীণ এলাকায় সজলধারা প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই সংক্রান্ত কাজের টাকা আগের আমলে আটকে রাখা হয়েছে বলে পরিষদ সূত্রের খবর।
তৃণমূল ক্ষমতাসীন হলে ওই তদন্তে যাঁদের গাফিলতি মিলেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা নিয়েও আলোচনা চলছে মহকুমা পরিষদের অন্দরে। সভাধিপতি পাসকেল মিন্জ বলেন, “গত এক মাস ধরেই আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা নিয়ে নানা ধরনের চেষ্টা হচ্ছিল। এই ডামাডোল পরিস্থিতিতে কাজেরও ক্ষতি হয়েছে। ডামাডোলের সুযোগ নিতে অনেকেই সক্রিয় হয়। সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
বিরোধী দলনেতা আইনুল হক বলেন, “পাসকেল মিন্জ সভাধিপতি হওয়ার পর থেকেই কোনও কাজ তিনি করতে পারছেন না। আমরা নতুন বোর্ড গড়ার পর দ্রুত সমস্যা মেটাতে তৎপর হব।”
|