১৮ ইঞ্চির একটি গর্তের ভিতরে কালো ছাই। হাত ঢোকালেই বেরিয়ে আসছে কালো হাড়গোড়। দক্ষিণ কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দেওয়ালের ভিতর থেকে ৫০টিরও বেশি পাখির কঙ্কাল উদ্ধারকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত থেকে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মঙ্গলবার সকালেও রহস্য কাটেনি। জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বৈজ্ঞানিকেরাও খোলসা করে কিছু জানাতে পারেননি।
স্কুল সূত্রের খবর, শনিবার থেকে স্কুলের সেন্ট্রাল অ্যাকাউন্টস অফিসের একটি ঘরে ফলস্ সিলিং তৈরির জন্য ৩০ ইঞ্চির দেওয়ালে ১৮ ইঞ্চির গর্ত কাটা হচ্ছিল। রবিবার বিকেলে চুন-সুরকির দেওয়ালে ছ’নম্বর গর্তটি কাটতে শুরু করেন মিস্ত্রিরা। এক মিস্ত্রি মুস্তাক খান বলেন, “১২ ইঞ্চি কেটে দেখি কালো ছাইতে ভর্তি। ভিতরে কালো হয়ে যাওয়া ছোট ছোট হাড়, পাখির মাথা। যত ছাই ঘাঁটা হচ্ছে, তত কঙ্কাল বেরোচ্ছে।” |
স্কুলের দেওয়াল থেকে উদ্ধার পাখির কঙ্কাল। |
এ দিন গিয়ে দেখা যায়, সেক্রেটারির ঘরের টেবিলে পাখির কঙ্কালগুলি রাখা। কয়েকটির গায়ে কিছুটা কালো পালক। সকালেই জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে বিষয়টি জানান স্কুলের সম্পাদক সুপ্রিয় ধর। তিনি বলেন, “খুবই আশ্চর্যের। কোথা থেকে এত পাখি এল, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এর আগে কখনও ওই দেওয়াল ভাঙা হয়নি। আবার অন্য কোনও জায়গা দিয়েও ওই দেওয়ালের ভিতরে ঢোকা সম্ভব নয়।”
স্কুলের যে ঘরটির দেওয়াল থেকে ওই কঙ্কাল মিলেছে, সেখানে গিয়ে দেখা গেল ছ’নম্বর গর্তটিতে তখনও পাখির কঙ্কাল দেখা যাচ্ছে। স্কুলের অফিস সেক্রেটারি রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, ওই দেওয়ালের পিছনেই রয়েছে সিঁড়ি ও হাসপাতাল। চিমনি থাকলেও তা অন্য দিকে। তার সঙ্গে ওই দেওয়ালের কোনও সম্পর্ক নেই। তা হলে প্রশ্ন হল, পাখিগুলি ওখানে এল কোথা থেকে? সদুত্তর নেই কারও কাছেই।
এ দিন দুপুরে স্কুলে যান জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বৈজ্ঞানিক মহেশ শরণ। তিনি বলেন, “ফোনে স্কুল কর্তৃপক্ষের কথা শুনে ভেবেছিলাম পায়রা হতে পারে। কিন্তু পাখিগুলির মাথার খুলি দেখে মনে হচ্ছে কাক।”
পাখি বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী বলেন, “ওই কঙ্কালের একটি ছবি দেখে মনে হয়েছে, ওগুলি হাড়গিলে পাখি হতেও পারে। আগে কলকাতা শহরে প্রচুর হাড়গিলে পাখি ছিল। এখন আর তাদের দেখা মেলে না।”
|