মোহনবাগান ছেড়ে মহমেডানে আসার তিন মাসের মধ্যেই ফের বিতর্কের শিরোনামে টোলগে ওজবে। কোচ বনাম অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকারের যে ঝামেলা দলের অন্দরমহলে এতদিন সযত্নে সুরক্ষিত রাখা ছিল, সালগাওকর ম্যাচের পর তা প্রকাশ্যে এল।
ঝামেলার সুত্রপাত টোলগের ফিটনেস-রহস্য নিয়ে। সাদা-কালো কোচ আবদুল আজিজের দাবি, “টোলগে এখনও পুরো ফিট নয়। প্র্যাক্টিসে পরিশ্রম করতে বললে, গুরুত্ব দেয় না। এখনই নিজেকে সুপারস্টার ভেবে নিলে যা হয় আর কী! ওর জন্য আমাকে দলের ফর্মেশন পর্যন্ত বদলাতে হচ্ছে।” স্ট্রাইকার পজিশন বেশি পছন্দ টোলগের। কিন্তু আই লিগের প্রথম ম্যাচ থেকেই তাঁকে উইংয়ে খেলাচ্ছেন আজিজ। আর তাতেই বেজায় চটেছেন টোলগে। সোমবার বিকেলে গোয়ার বিমানবন্দর থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে স্ট্রাইকারে খেলে দু’গোল করলাম। ফাইনালেও গোল। রেকর্ড মিলিয়ে দেখুন, কলকাতা লিগেও এক গোল করেছি। কিন্তু যে দিন থেকে উইংয়ে খেলছি আমিও গোল পাচ্ছি না, টিমও হারছে। এ বার আপনারা বিচার করুন, কে ভুল আর কে ঠিক?”
রেকর্ড ঘাটলে কিন্তু টোলগের সঙ্গে দ্বিমত হওয়া যাচ্ছে না! তবে মহমেডান কোচের অভিযোগও যে উড়িয়ে দেওয়া মুশকিল, “টোলগে ম্যাচে নড়াচড়া করবে না। সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে আর ওকে সবাই পাস বাড়িয়ে দেবে, গোল করার জন্য। এ রকম ভাবে ফুটবল খেলা যায় না। সালগাওকর ম্যাচে যখন তিন-চারটে গোল নষ্ট করল, তখনই তুলে নিতে চেয়েছিলাম। পারিনি,” গোয়া বিমানবন্দর থেকে ফোনে বলছিলেন পেনদের কোচ।
টোলগের আচরণ নিয়েও ক্ষুব্ধ কোচ-সহ ক্লাবের অনেক ফুটবলারই। ক্লাব সূত্রের খবর, ফুটবলের চেয়ে পার্টি এবং ডিস্কোতেই বেশি মজে টোলগে। এমনকী কোচ আজিজের কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনও হেলদোল নেই তাঁর। মহমেডান কোচ বলছিলেন, “টোলগের সঙ্গে আমি দশ থেকে বারো বার আলোচনায় বলেছি। ওর কোনও মানসিক সমস্যা হচ্ছে কিনা, সেটাও জানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ও ওর জগতেই ব্যস্ত। ক্লাবের সবচেয়ে দামি ফুটবলারের ক্লাবের প্রতি যে দায়বদ্ধতা থাকা উচিত, সেটা টোলগের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না।”
কোচ বনাম টোলগের লড়াইয়ে মহমেডান কর্তারা অবশ্য আজিজের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। ক্লাব প্রেসিডেন্ট সুলতান আমেদ বললেন, “আমি ওখানে থাকা কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। রিপোর্ট চেয়েছি। কোচ-টোলগের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে। ওরা কলকাতায় ফিরলে কথা বলব। দোষী যে-ই হবে তাকে সতর্ক করব। কোচের কথা সবাইকে শুনতেই হবে। শৃঙ্খলাভাঙা চলবে না।” |