স্কুল খোলার ১১ দিন পরে সোমবার থেকে কাজে যোগ দিলেন দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হেলেন সরকার। কর্তৃপক্ষ জানান, সোমবার থেকেই তিনি প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন। গত শনিবার পরিচালন সমিতির বৈঠকেই ঠিক হয় সোমবার থেকে স্কুলে আসবেন হেলেন। এ দিন স্কুলছাত্রী ও শিক্ষিকাদের ধন্যবাদ দিয়ে নানা কথা বললেও ঐন্দ্রিলা দাস প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি তিনি।
রোজের মতো দশটা পাঁচে স্কুল চালু হলেও হেলেন স্কুলে আসেন সকাল সাতটার মধ্যে। স্কুলের সামনে সকাল থেকেই দমদম থানার পুলিশ ছিল। ছুটির পরে মেয়েদের বাড়ি ফেরার তদারকি করতে দেখা যায় হেলেনকে।
প্রার্থনা দিয়ে স্কুল শুরু হওয়ার পরে হেলেনকে স্বাগত জানাতে অডিটোরিয়ামে ভিড় করে ছাত্রী ও শিক্ষিকারা। হেলেন বলেন, “ছাত্রী, শিক্ষিকা ও কর্মীদের ভালবাসায় আবার এসেছি। স্কুলে না এলেও মানসিক ভাবে আমি তোমাদের পাশে ছিলাম। আমরা ফের পরিবারের মতোই থাকব।” আরও বলেন, “কঠিন সময়ে তোমরা যে ভাবে স্কুলের পাশে দাঁড়িয়েছ, তাতে বুঝেছি যে সঠিক শিক্ষা দিতে পেরেছি। ফলে তোমরা বুঝতে পেরেছ কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল।” |
পড়ুয়াদের সঙ্গে হেলেন সরকার। সোমবার।—নিজস্ব চিত্র। |
ছুটির পরে ছাত্রীরা জানায়, প্রধান শিক্ষিকা প্রতিটি ক্লাসরুমে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে ঐন্দ্রিলা প্রসঙ্গে কিছু বলেননি। ছাত্রীদের একাংশ জানায়, প্রধান শিক্ষিকা ফিরে আসায় তারা খুশি।
স্কুলে ঢুকে দেখা যায় মেরামতির কাজ প্রায় হয়ে গিয়েছে। দরজার কাচ লাগানো না হলেও স্কুলের অফিসঘর, শিক্ষিকাদের ঘরের মেরামতি প্রায় শেষ।
হেলেনের ফেরাকে স্কুল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করলেও প্রথম দিন তিনি ঐন্দ্রিলার প্রসঙ্গে কোনও কথা না বলায় ব্যথিত হন ওই ছাত্রীর বাবা শান্তনু দাস। তিনি বলেন, “হেলেন সরকার শুধু প্রধান শিক্ষিকাই নন, উনি তো মা-ও। ওঁরও তো মেয়ে আছে। মা হয়ে মায়ের কষ্ট কি উনি একটুও বুঝতে পারেননি? ঐন্দ্রিলা তো আর স্কুলে যাবে না। আজ স্কুলে এসে ওর কথা কি প্রধান শিক্ষিকার মনে পড়ল না?”
ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পরে তার বাবা শান্তনু দাস স্কুলের গাফিলতিতে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ করেন। পর দিন, ১২ সেপ্টেম্বর এর জেরে ভাঙচুর হয় স্কুলে। গ্রেফতার হন হেলেন সরকার। তিন দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরে তাঁর জামিন হয়। ঘটনার পনেরো দিন পরে স্কুল খোলে। কিন্তু তখন স্কুলে যোগ দেননি হেলেন।
|