প্রাতর্ভ্রমণ সেরে মন্দিরে উপাসনা করে বাড়ি ফিরছিলেন আশি বছরের এক বৃদ্ধা। আচমকা তাঁর রাস্তা আটকাল একটা মোটরবাইক। তাতে সওয়ার দুই যুবক। এক জন নিমেষে তাঁর গলা থেকে সোনার হার ছিনিয়ে চম্পট দিল। সোমবার সকাল আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে গরফা থানার আদর্শনগরে। বৃদ্ধার নাম আরতি চৌধুরী। বাড়ি নস্করপাড়া লেনে।
পুলিশ জানায়, এক দুষ্কৃতী বৃদ্ধার মাথা চেপে ধরেছিল। অন্য জন হার ছিনিয়ে নেয়। আরতিদেবীর সঙ্গে আর এক ৭১ বছরের বৃদ্ধা ছিলেন। কিন্তু তিনি একটু পিছনে ছিলেন। তখন রাস্তায় লোকও কম ছিল। তবে বৃদ্ধার চিত্কারে কয়েক জন ছুটে এলেও দুষ্কৃতীদের নাগাল পাননি। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (এসএসডি) সন্তোষ পাণ্ডে জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মাসখানেক আগে পাটুলি ও সার্ভে পার্ক থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই হয়। দুষ্কৃতীরা এখনও অধরাই। পাটুলিতে ছিনতাইবাজদের অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছিলেন এক ছাত্রী। আর ঠিক পুজোর মুখে এই হার ছিনতাইয়ের ঘটনায় কপালে ভাঁজ পড়েছে লালবাজারের।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর পুজোর আগেও এ দিনের মতো একই কায়দায় যাদবপুর, ঢাকুরিয়া, গরফা এবং সার্ভে পার্ক এলাকায় ছিনতাই হয়েছিল। কোথাও কোথাও ছিনতাইয়ে বাধা পেয়ে গুলিও চালায় দুষ্কৃতীরা। গোয়েন্দারা জানান, সব ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীরা বয়স্ক মহিলাদের বেছে নিয়েছিল। আরতিদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের মাথায় হেলমেট ছিল। তাদের মুখ দেখা যায়নি।
আরতিদেবীর ছেলে বুলবুল চৌধুরী বলেন, “মা রোজ সকালে হাঁটতে যান। কোনও কোনও দিন আমার স্ত্রী সঙ্গে থাকেন। যে ভাবে হার ছিনতাই হল, তাতে মা আর একা যেতে সাহস পাবেন বলে মনে হয় না।” স্থানীয় বাসিন্দারাও এই ঘটনায় আতঙ্কিত। অনেকেরই অভিযোগ, আদর্শনগরে এই ভাবে কখনও ছিনতাই হয়নি। পুলিশি টহল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, ভোরে অনেকেই হাঁটতে বেরোন। তখনও পুলিশকে এলাকায় টহল দিতে বড় একটা দেখা যায় না।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, হার ছিনতাই করার পরে দুষ্কৃতীরা বাইকে করে ঢাকুরিয়া ব্যাঙ্ক প্লটের দিকে চলে যায়। পুলিশের অনুমান, ওই বৃ্দ্ধা রোজ শহিদনগরের রাস্তা দিয়ে একাই বাড়ি ফেরেন, তা জানত দুষ্কৃতীরা। |