রাস্তা না সারানোর অভিযোগে কাঁকসায় ফের বাধা এসারকে
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে ফের এসার অয়েলের কাজ বাধা পেল কাঁকসার আকন্দারায়। সোমবার তাঁরা রাস্তা কেটে দেন। গাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসারের বিভিন্ন পিটে কাজ থেমে যায়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁদের জমির উপরে তৈরি রাস্তা দিয়ে দেড় বছর ধরে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে এসার। কিন্তু জমির কোনও দাম দেওয়া হয়নি। ভারী গাড়ি যাতায়াত করায় রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। তা সারাইয়েরও কোনও উদ্যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত রাস্তা ব্যবহার করতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। এসারের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “যতদূর জানি, যে রাস্তা আমরা ব্যবহার করছি, সেই রাস্তায় কোনও ব্যক্তি মালিকানার জমি নেই। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে।”
রাস্তা কেটে প্রতিবাদ গ্রামবাসীদের। —নিজস্ব চিত্র।
ভূগর্ভস্থ কোল বেড মিথেন (সিবিএম) তোলার জন্য অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও কাঁকসা ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় শ’দুয়েক কুয়ো খুঁড়েছে এসার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আকন্দারার আশপাশে মোট ৬টি পিট রয়েছে। সেগুলি প্রধান রাস্তা থেকে ভিতরে। সে জন্য গাড়ি যাতায়াত করে গ্রামের রাস্তা দিয়ে, যেটি স্থানীয় ২৩ জন বাসিন্দার জমির উপর দিয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর দেড়েক আগে থেকে ওই রাস্তা এসার ব্যবহার করছে। মোরামের সেই রাস্তা ভারী গাড়ি যাওয়ার অনুপযুক্ত। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এসারের ভারী গাড়ি যাতায়াতের ফলে রাস্তা ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু তা সংস্কারের কোনও উদ্যোগ হয়নি।
সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ শ’খানেক বাসিন্দা সেই রাস্তা দু’জায়গায় কেটে দিয়ে পিটগুলির সঙ্গে প্রধান রাস্তার যোগাযোগ ছিন্ন করে দেন। তাঁরা জানান, রাস্তায় মোট ২৩ জনের ৫.৩২ একর জমি রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষ বাউড়ি বলেন, “সেই জমির কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি জমি মালিকদের। তা ছাড়া শুনছি, এ বার রাস্তার পাশ দিয়ে পাইপলাইন পাতার কাজ হবে।” তাঁর দাবি, আগের ক্ষতিপূরণই দেওয়া হল না। ফের আবার সেই জমি ব্যবহার করতে দিতে নারাজ তাঁরা।
প্রতিশ্রুতি মতো গ্রামোন্নয়নের কাজ না হওয়ার অভিযোগে গত ১১ অগস্ট আকন্দারায় এসারের কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। রাস্তা খারাপ হয়ে পড়া ছাড়াও প্রকল্পের দূষিত জল বয়ে আশপাশের জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ার অভিযোগও তুলেছিলেন তাঁরা। সে বার পুলিশি মধ্যস্থতায় বিক্ষোভ থামে। এই ঘটনা নিয়ে গ্রামে তৃণমূলের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে আসে। পরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সমস্যা মেটাতে এসারের প্রতিনিধি ও তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর সঙ্গে দুর্গাপুরে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শিল্পমন্ত্রী জানিয়ে দেন, মূলত ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ সব ঘটছে। বৈঠকে সব পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। ভবিষ্যতে আর কাজ বন্ধ হবে না।
এ দিনের বিক্ষোভকারীরাও নিজেদের তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বলে দাবি করেন। নুরে আলম মিদ্যা নামে এক জন বলেন, “আমরা সবাই তৃণমূল কর্মী। এ দিন প্রতিবাদের মাধ্যমে আমরা রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।” যদিও তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের সদস্য দেবদাস বক্সীর বক্তব্য, “আমাদের ঘোষিত নীতি হল, কাজ বন্ধ করে কোথাও কোনও আন্দোলন করা যাবে না। সমস্যা মেটাতে হবে আলোচনার মাধ্যমে। যাঁরা রাস্তা কেটে কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ জানান, তারা নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দেন কী করে?”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.