মাইক হাসির বই, আইপিএলে শ্রীনির ছবি আজ অস্ত্র বিরোধীদের
ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে রবিবাসরীয় রাতের চেয়ে রোমান্টিক ক্রিকেট যুদ্ধ কমই এসেছে। সচিন বনাম রাহুল অন্তিম দেখা। তার একজনের কি না জীবনের শেষ ম্যাচ ঘটে গেল। রবিবার রাতে চোখের পলক না ফেলে কোটলা ম্যাচ যাঁরা দেখছিলেন, তাঁদের অনেকেরই হয়তো খেয়াল নেই, মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে, মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বাস্তববাদী যুদ্ধ ঘটতে চলেছে সোমবার সকালে। আদালত কক্ষে শ্রীনি বনাম আদিত্য বর্মা। বকলমে শ্রীনি বনাম মনোহর।
পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সোমবারই হয়তো আর না পিছিয়ে সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় দিয়ে দেবে। শ্রীনি চাইছেন, কোর্ট তাঁর উপর থেকে বোর্ড চালানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক। মেনে নিক তাঁর পক্ষের উকিলদের যুক্তি যে, আইপিএলের সঙ্গে বোর্ডের কোনও সম্পর্ক নেই। অতএব আইপিএল কেলেঙ্কারির জন্য বোর্ড প্রেসিডেন্টকে দায়ী করা উচিত নয়। এই দাবি আদালত মেনে নিলে সোমবার থেকে বোর্ড চালানোর অনুমতি পেয়ে যাবেন শ্রীনি। কয়েক মাস ধরে ‘রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের’ পর জয় হবে তাঁর।
বিরোধীরা অবশ্যই মনে করে না সেই সম্ভাবনা আছে। তাঁদের প্রধান কৌঁসুলি হরিশ সালভে বিদেশে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সোমবার মামলা পিছনোর আর্জি জানাননি। আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে নিয়েই তাঁরা লড়বেন। এঁরা কোর্টের কাছে চান, এক, নিজস্ব তদন্ত কমিটি যারা প্রকৃত অর্থে নিরপেক্ষ এবং খতিয়ে দেখবে গুরুনাথ মইয়াপ্পন দোষী কি না।
আরও গুরুত্বপূর্ণ দুই, যতক্ষণ না সেই কমিটির কাজ শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ শ্রীনিবাসন যেন বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসতে না পারেন।
প্রস্তাবিত তদন্ত কমিটির জন্য আদিত্য বর্মার পক্ষ থেকে তিন বিচারপতির নাম পেশ করা হবে। বিচারপতি সি কৃষ্ণ, বিচারপতি মুকুল মুদগল ও বিচারপতি কাপাডিয়া। এঁদের মধ্যে একজন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ছিলেন। একজন উচ্চতর আদালতের অন্যতম বিচারপতি। অন্য জন পঞ্জাব হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। শ্রীনিবাসনরা অরুণ জেটলিকে চেয়ারম্যান করে যে তদন্ত কমিটি গড়তে চেয়েছেন, তাতে একেবারেই রাজি নন আদিত্য। আদালতকে এঁদের পক্ষ থেকে বলা হবে, শ্রীনিকে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হলে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কাগজপত্র লোপাট করে দেবে।
আদালত কক্ষে পেশ করা হবে মাইক হাসির বই। যেখানে তিনি বলেছেন, গুরুনাথই সিএসকে চালাতেন। বোর্ডের বিভিন্ন টেন্ডার ডকুমেন্টের কপি পেশ করা হবে। যেখানে দেখা যাচ্ছে বোর্ড প্রেসিডেন্টই আইপিএলের যাবতীয় নির্দেশ দিয়েছেন। খুব সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রাঁচি ও জয়পুরে সিএসকে-র সঙ্গে ছিলেন শ্রীনিবাসন। সে সব ছবি দিয়ে দেখানো হবে, উনি যে বলছেন সিএসকের সঙ্গে নেই, তা সর্বৈব মিথ্যে।
কথা হয়েছিল, পাঁচ প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসনকে লিখিত ভাবে আবেদন জানাবেন বোর্ড ছাড়ো, বোর্ডের সম্মান বাঁচাও। এঁরা হলেন, পওয়ার, মনোহর, বিন্দ্রা ও মুথাইয়া। এঁরা ডালমিয়াকেও অনুরোধ করেছিলেন, চিঠিতে আপনিও সই করুন। ডালমিয়া রাজি হননি। বলেছেন, সচিনের ম্যাচটা ওরা আমাদের দিতে পারে, আর একটু দেখি। এ দিকে খবর হল, সচিন ম্যাচের আর এক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বেঙ্গালুরুকে নিয়ে এসেছেন শ্রীনিবাসন। কর্নাটকের আসন্ন নির্বাচনে কোণঠাসা কুম্বলেকে সাহায্যের জন্য ম্যাচটা তাঁদেরও দেওয়া হতে পারে।
এ দিকে, জ্যোতিষীরাও নেমে পড়েছেন বাজারে। শ্রীনিবাসন প্রতি পদক্ষেপে জ্যোতিষ মেনে চলেন। এখানেও চলছেন। তাঁর বিপক্ষরা আবার দাক্ষিণাত্যের কুম্ভকোনম বলে এক মন্দিরের বিখ্যাত জ্যোতিষীকে দিয়ে কোষ্ঠী বিচার করিয়েছেন। সেই জ্যোতিষী বলেছেন, এই যুদ্ধে শ্রীনির হার অনিবার্য।
রোমান্টিকেরা যখন ক্রিকেট মাঠের ডুয়েল নিয়ে ব্যস্ত, তখন ক্রিকেট বাস্তববাদীদের চোখে ঘুম নেই। আর মাত্র ক’টা ঘন্টা। তার পরই কি শ্রীনি নাটকের যবনিকা?

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.