মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সবার আগে দৌড়ে গেলেন তিনি। পিঠ চাপড়ে দিলেন তাঁর এক সময়কার সতীর্থর। মাথাটা সামান্য ঝুঁকিয়ে বেরিয়ে গেলেন রাহুল দ্রাবিড়। ক্রিকেটকে শেষ বারের মতো বিদায় জানিয়ে। সচিন তেন্ডুলকর তখনও হাততালি দিয়ে যাচ্ছেন।
এক জন ক্রিকেটকে চিরবিদায় জানিয়ে গেলেন। অন্য জনকে আর দেখা যাবে না টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। দুই কিংবদন্তির বিদায় মুহূর্ত দু’রকম হয়ে রইল। দ্রাবিড়কে বিষণ্ণ মুখে দেখতে হল, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স প্লেয়ারদের কাঁধে চেপে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের উৎসবে মেতেছেন সচিন। ম্যাচের পরে দ্রাবিড় বলছিলেন, “এ রকম দর্শক, এ রকম মাঠ, এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারার অনুভূতিটাই অন্য রকম। খুব আবেগপ্রবণ একটা মুহূর্ত।” আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন অনেকেই। |
বিদায় বেলা। জীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন রাহুল দ্রাবিড়। ছবি: সিএল টি-টোয়েন্টি। |
ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছে আধ ঘণ্টা হল। ফিরোজ শাহ কোটলায় দাঁড়িয়ে সুনীল গাওস্কর প্রথমে দ্রাবিড় নিয়ে বললেন, “ব্র্যাডম্যানকে শেষ টেস্টে চার রান করতে হত একশো গড় পেতে গেলে। কিন্তু উনি তা পারেননি। সবার সব স্বপ্ন সত্যি হয় না। কিন্তু রাহুল যখন পিছন ফিরে দেখবে, তখন ওর আক্ষেপ করার কিছু থাকবে না। এ বছর বিতর্কে জর্জরিত রাজস্থানকে যে ভাবে ও টেনে নিয়ে গিয়েছে, তা এক কথায় অসাধারণ।” সচিন নিয়েও সমান আবেগপ্রবণ দেখাল গাওস্করকে। যখন বললেন, “গত বিশ্বকাপে সচিনের জন্য টিমের সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতেও সেটাই দেখা গেল।” দ্রাবিড় হয়তো ট্রফি দিয়ে যেতে পারলেন না রাজস্থানকে। কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু দিয়ে গেলেন। রাজস্থান কোচ প্যাডি আপটন যেমন বললেন, “দ্রাবিড় আট নম্বরে ব্যাট করতে নামল শুধু টিমের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। ও টিমকে জেতার সেরা সুযোগটা করে দিতে চেয়েছিল। এক জন ক্রিকেটার কতটা নিঃস্বার্থ হতে পারে, সেটা দ্রাবিড় আরও একবার বুঝিয়ে গেল। এটাই দ্রাবিড়ের ক্যারিশমা।”
ম্যাচ শুরুর আগে ভারতীয় ক্রিকেটের দুই মেগাস্টার মুখ খুলেছিলেন একে অপরকে নিয়েও। দ্রাবিড় বলেন, “সচিনের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নেওয়াটা দারুণ একটা মোটিভেশনের ব্যাপার।” আর সচিন বলে গেলেন, “দ্রাবিড় হল মাস্টার টেকনিশিয়ান। আমার টিমে দ্রাবিড়ের জায়গা সব সময় তিন নম্বরে।” |
বিদায় রাহুল |
টেস্ট: ১৬৪ ১৩২৮৮ রান। সর্বোচ্চ ২৭০। গড় ৫২.৩১। সেঞ্চুরি ৩৬।
ওয়ান ডে: ৩৪৪ ১০৮৮৯ রান। সর্বোচ্চ ১৫৩। গড় ৩৯.১৬।
স্ট্রাইক রেট ৭১.২৪। সেঞ্চুরি ১২। হাফসেঞ্চুরি ৮৩।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে: ১ ম্যাচে ৩১ রান।
ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে: ১০৯ ম্যাচে ২৫৮৬ রান। সর্বোচ্চ ৭৫*।
গড় ২৭.৭৯। স্ট্রাইক রেট ১১৩.৯২। |
|
দ্রাবিড় নিয়ে গাওস্কর
ব্র্যাডম্যানকে শেষ টেস্টে চার রান করতে হত একশো গড় পেতে গেলে। কিন্তু উনি তা পারেননি। সবার সব স্বপ্ন সত্যি হয় না। কিন্তু রাহুল যখন পিছন ফিরে দেখবে, তখন ওর আক্ষেপ করার কিছু থাকবে না।
সচিন নিয়ে গাওস্কর
গত বিশ্বকাপে সচিনের জন্য টিমের সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতেও সেটাই দেখা গেল। |
|