পাহাড় সচল রাখতে সরকারের তরফে ‘কড়া’ পদক্ষেপ চালু রাখার পাশাপাশি এ বার দলীয় ভাবেও মোর্চার মোকাবিলার জন্য তোড়জোড় শুরু করল শাসক দল।
আজ, রবিবার কার্শিয়াঙের মোটর স্ট্যান্ডে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের জনসভা সেই মোকাবিলার প্রথম দলীয় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। কার্শিয়াঙে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের পর জনসভা করার কথা তাঁর।
শুধু তৃণমূল নয়, চাপের মুখে পড়া মোর্চা নেতাদের উদ্বেগ বাড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিংও। জিএনএলএফ সূত্রের খবর, শনিবার ঘিসিং আচমকাই পৌঁছে ছিলেন পাহাড়ে। কার্শিয়াঙের তিনধারিয়া, গিদ্দে পাহাড় এলাকায় মন্দিরে পুজো দেন তিনি। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয় তাঁর। দলের মুখপাত্র দয়া প্রধান বলেন, “মন্দিরে পুজো দিতে এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেছেন সুবাস ঘিসিং। কর্মীদের কথা দিয়ে গিয়েছেন কিছু দিনের মধ্যেই আবার আসবেন তিনি।
এ অবস্থায়, অক্টোবরের মধ্যে যাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়, সে জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন মোর্চা নেতৃত্ব। দলের প্রথম সারির নেতা বিনয় তামাঙ্গের জামিনের ব্যবস্থা করে জিটিএ-এর ‘চিফ এগজিকিউটিভ’ হিসেবে তাঁকে শপথ নেওয়ানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে মোর্চা।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে যোগ দিয়ে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন বলেছেন, “পাহাড় সমস্যা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও জটিলতা নেই।” যদিও রাজ্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এখনও পর্যন্ত কোনও আগ্রহ দেখায়নি। মোর্চার তরফে প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রী অবশ্য আশাবাদী শীঘ্রই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে।
তিনি বলেছেন, “অক্টোবরেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা। আমরা আশাবাদী।” পাশাপাশি, পাহাড়ে তৃণমূল-জিএনএলএফের তৎপরতার প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “পাহাড়ে গণতন্ত্র আছে। যে কোনও দল সভা-সমাবেশ করতে পারে। তবে পাহাড়ে সকলেই গোর্খাল্যান্ড এর দাবিতে সামিল। তাই তৃণমূল কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।”
আর জিএনএলএফ? মোর্চা নেতার দাবি, পাহাড়ে জিএনএলএফের কোনও ‘গ্রহণযোগ্যতা’ আর নেই।
এ দিন দার্জিলিঙে আরও একটি মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন জিটিএ-এর সদ্য নির্বাচিত ‘চিফ এগজিকিউটিভ’ বিনয় তামাঙ্গ। শনিবার দার্জিলিং জেলা আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক বিপ্লব রায় ওই নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রের খবর, গত অগস্ট মাসে কালিম্পঙের তাকদা বাংলো পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বিনয়বাবুর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিল এ দিন তারই শুনানি
ছিল। তবে তাকদা-মামলায় জামিন পেলেও এখনই জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না বিনয়। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলা রয়েছে। এই নিয়ে ৮টি মামলায় জামিন পেলেন তিনি। এখনও দার্জিলিং আদালতে একটি এবং জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় জামিন পাননি তিনি।
দার্জিলিং আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ বলেন, “তাকদা-কাণ্ডে জামিনে হলেও লোধামায় পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনায় বিনয় তামাঙ্গের আর্জি না-মঞ্জুর হয়েছে।”
|