চার ঘণ্টা ধরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করাতে পুলিশকে কার্যত ‘বাধ্য’ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত শুক্রবার বিকেলে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের করমানপুর এলাকার এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত পড়শি যুবকের বিরুদ্ধে রাতেই ইটাহার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই নাবালিকার বাবা। তারপরেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তুলে এ দিন শনিবার ভোর ৫টা থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করে বাসিন্দারা। অভিযোগের তদন্ত করে দেখা হবে বলে পুলিশের তরফে আশ্বাস দিলেও অভিযুক্তকে গ্রেফতারির দাবিতেই বাসিন্দারা অনড় থাকেন। এরপরেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলে সকাল ৯টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। জেলার পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। তদন্তের কাজ যথাযথ ভাবে যাতে হয় তার নির্দেশ দেব।”
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম আহাসান আলি। ধৃতকে এদিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক স্তোত্রি সাহা জামিনের আবেদন নাকচ করে আগামী ১ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। সরকারী আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার বলেন, “অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকালে ওই কিশোরী বাড়ির পাশের একটি জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। সেই সময় অভিযুক্ত যুবক তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশে বিষয়টি জানালে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, থানায় অভিযোগ করার পরে শুক্রবার রাতে অভিযুক্তের বাড়িতে পুলিশ গেলেও, তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। এরপরেই এদিন সকাল থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কয়েকশো বাসিন্দা এ দিন অবরোধে সামিল হন। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়ক জুড়ে যানজট তৈরি হয়। অবরোধ শুরুর চার ঘণ্টা পরে পুলিশের তরফে অভিযুক্তকে গ্রেফতারির কথা ঘোষণা করার পরে বাসিন্দারা অবরোধ তুলে নেন। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি ইটাহার থানার ওসি নিমশেরিং ভুটিয়া। ওসির কথায়, “বাসিন্দারা ভুল বুঝে পথ অবরোধ করেছিলেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছিল। সে কারণেই গত শুক্রবার অভিযুক্তের বাড়িতে পুলিশ যায়।” যদিও এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, “পুলিশ প্রথমে অভিযোগটিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। সকলে মিলে পথ অবরোধ না করলে পুলিশ হয়ত কোনও পদক্ষেপই করত না।” |