ক্যাপিটল হিল কাণ্ড
পুলিশ কেন গুলি চালাল, উঠছে প্রশ্ন
শুধুমাত্র বেপরোয়া গাড়ি চালানো রুখতে কেন গুলি চালাল পুলিশ, উত্তর চাইছে মিরিয়াম কেরির পরিবার। বিশেষত গাড়ির ভিতর থেকে যখন একটি বারের জন্যও গুলি ছোড়া হয়নি, তখন পুলিশের গুলিবর্ষণ করার সিদ্ধান্ত আদৌ আইনসঙ্গত কি না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে গাড়িতে মিরিয়াম-কন্যা এরিকার উপস্থিতি। একাংশের দাবি, যদি গুলিতে কোনও ভাবে আহত হত আঠারো মাসের ওই খুদে, তা হলে?
প্রশ্নের উত্তর নেই। আছে শুধু দাবি আর পাল্টা দাবি। শুক্রবার মিরিয়ামের দেহ শনাক্ত করতে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে এসেছিলেন তাঁর দুই বোন ভ্যালেরি কেরি এবং অ্যামি কেরি জোনস। ভ্যালেরি আবার নিউ ইয়র্ক পুলিশের প্রাক্তন সার্জেন্ট। সে পদের অভিজ্ঞতা থেকেই শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের সামনে কান্নাভেজা গলায় বললেন, “আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত গুলি ব্যবহার করার কোনও দরকার ছিল না।” ওয়াশিংটন মেট্রোপলিটন পুলিশেরও নিয়ম, কোনও চলন্ত গাড়ি লক্ষ্য করে তত ক্ষণ অবধি গুলি চালানো হবে না, যত ক্ষণ না পর্যন্ত সেই গাড়ি থেকে কোনও বিপজ্জনক আঘাত করা হচ্ছে। কিন্তু ঘটনাস্থলটির গুরুত্ব অনুযায়ী সেখানে নিয়ম যে আলাদা হতে পারে, সেটা মাথায় রেখেও সখেদ প্রশ্ন ভ্যালেরির, “আমার বোন সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ছিল। তা হলে গুলি চলল কেন?”

ই সেই দুই বোন ভ্যালেরি কেরি ও অ্যামি কেরি জোনস। ছবি: রয়টার্স।
‘সিক্রেট সার্ভিস’ এবং ক্যাপিটল পুলিশের সিদ্ধান্তের সমর্থনে যাঁরা মুখ খুলেছেন, তাঁদের দাবি, বাকি এলাকাগুলির তুলনায় ওয়াশিংটন ডিসির পরিস্থিতি আলাদা। প্রথমত যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি আমেরিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। তাই সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ধরন-ধারণ আলাদা। দ্বিতীয়ত, একাধিক বার বলা সত্ত্বেও গাড়ি থামানো তা দূর, তার গতি পর্যন্ত কমাননি মিরিয়াম। দেখে পুলিশ এবং সিক্রেট সার্ভিসের কর্মীদের মনে জঙ্গি-হানার আশঙ্কাই জেগেছিল। তারা ভেবেছিল, গাড়ি-বোমা ব্যবহার করে ক্যাপিটল বিল্ডিং-এ হামলা চালাতে এসেছে কোনও জঙ্গি। মিরিয়ামের মৃত্যুর পর জানা যায়, কোনও আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক, কিছুই ছিল না তাঁর কাছে। এরিকা-প্রশ্নে পুলিশের দাবি, চলন্ত গাড়ির ভিতর যে এক শিশুও রয়েছে, তা তাঁরা প্রথমে দেখতে পাননি। তখন শুধু জঙ্গি হানার আশঙ্কাই চেপে বসেছিল অফিসারদের মনে।
মিরিয়ামের মৃত্যুর পর কানেক্টিকাটে তাঁর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ওয়াশিংটন ডিসি মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেখান থেকে কিছু ওষুধপত্র মিলেছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, স্কিজোফ্রেনিয়া এবং বাইপোলার ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় সেগুলি। এ ছাড়া, মানসিক হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার তথ্যভরা কিছু কাগজপত্রও পেয়েছে পুলিশ। সব মিলিয়ে এটা মোটামুটি পরিষ্কার, মানসিক রোগগ্রস্ত ছিলেন মিরিয়াম। অ্যামি কেরি জোনস জানিয়েছেন, “আমার বোন সাইকোসিস এবং পোস্টপারটাম ডিপ্রেশনে ভুগছিল। ওষুধ এবং কাউন্সেলিং-ও চলছিল কিছু দিন।” সম্প্রতি তাঁর ওষুধ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরও অবশ্য ‘স্বাভাবিক’ই ছিলেন মিরিয়াম, দাবি অ্যামির।
কিন্তু অ্যামির বয়ানের সঙ্গে মিলছে না মিরিয়ামের প্রেমিকের বয়ান। তদন্তের স্বার্থে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন, প্রায়ই ‘ডিলিউশন’ হত মিরিয়ামের। সম্প্রতি ভাবতে শুরু করেছিলেন, তিনি ঈশ্বরের অবতার এবং ওবামা তাঁর উপর নজরদারি চালাচ্ছেন। তবে সেই বিশ্বাসের জেরেই এই হামলা কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.