এক দিকে কাঁটাতার। আর একটা দিকে কালজানি নদীর বাধায় উন্মুক্ত সীমান্ত সংলগ্ন তিনটি ছিটমহল। বাংলাদেশের তিন প্রান্তে মানুষই যেন নজর রাখেন শালমারার দুর্গা মণ্ডপে।
এলাকায় চাউর রয়েছে, কেউ কাঁটাতারের ফাঁক গলে, কেউ জলে ভেসে পৌঁছে যায় শালমারায়। ছিটের বাসিন্দারা তো এই সময়ে সীমারেখার ব্যবধান মানতে রাজিই নন। কোচবিহার সীমান্ত গ্রাম শালমারায় দুর্গা পুজো পরিণত হয় মিলন উৎসবে।
কোচবিহার শহর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে শালমারা গ্রাম। বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে তিনদিক ঘেরা।এলাকার পুজো এবারে ৬৫ বছরে পা দিয়েছে। উদ্যোক্তারা জানান, ষষ্ঠী থেকে নবমী চার দিন পুজাকে কেন্দ্র করে মেলা বসে শালমারায়। নবমীতে বস্ত্র এবং প্রসাদ বিতরণ। পুজো কমিটি সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য তরণীকান্ত বর্মন বলেন, “আমাদের পুজো মানুষের মিলনক্ষেত্র। বিভিন্ন গ্রামের মানুষ আসেন। মেলা বসে। ছিটমহল থেকেও অনেক মানুষ অংশ নেন।” বাংলাদেশ থেকে কেউ পুজোয় আসেন না বলে পুজোর কর্মকর্তারা দাবি করেন। বাসিন্দাদের কথায়, “অনেকে লুকিয়ে চুরিয়ে এসে ফিরে যান। বিএসএফ, বিডিআরও পুজোর কথা জানে।” শালমারার পর বাংলাদেশ কুরিগ্রামের ভুরুঙ্গামারি, ঢলডাঙ্গা ও পাগলার হাট। এলাকার কিছুটা অংশ কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। তবে কালজানি নদী ও এক জলার জন্য দুই কিলোমিটার উন্মুক্ত। ওপাশে বাংলাদেশের ছিটমহল মশালডাঙ্গা, ভুঁইমাটি ও গয়বাড়ি। এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা বলেন, কালজানির তীরে দাঁড়িয়ে চোখ রাখলে ওই পাশের কাশফুল দেখা যায়। সীমান্ত পার হয়ে দেবীর আগমনী বার্তা যেন পৌঁছে গিয়েছে ভুরুঙ্গামারিতেও। ও দিকে পুজো নেই। তাই আমাদের পুজো নিয়ে ওঁরা খুব উৎসাহিত বোধ করেন। খোঁজখবর রাখে। দূর থেকে দেখেন। কয়েকজন ‘নানাভাবে’ বাধা পার হয়ে চলেও আসেন। পুজো কমিটি সম্পাদক পঞ্চায়েত সদস্য মদনমোহন বর্মন বলেন, “বাংলাদেশ থেকে কেউ আসেন কি না বলতে পারব না। তবে ছিটমহলের বাসিন্দারা অংশ নেন।” |