উত্তরের দেবীবন্দনা
নজরকাড়া দুর্গা পুজো
মণ্ডপ আলোর চাকচিক্য নেই। যা আছে তা হল পঞ্জিকার নির্ঘন্ট মেনে আয়োজন। নিয়মনিষ্ঠ আর বাসিন্দাদের মনের টানে দিনহাটার শতাব্দী প্রাচীন মদনমোহন বাড়ির দুর্গাপুজো ঘিরে বাড়তি উৎসাহ তৈরি হয়। অঞ্জলি থেকে ভোগের প্রসাদ, সবকিছুতেই বাসিন্দাদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত। মদনমোহন পাড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির এই পুজোর এবার ১১৪তম বছর। মন্দির চত্বরের স্থায়ী মন্ডপে পুজোর প্রস্তুতি এগিয়েছে। পঞ্জিকার বিধি মেনে আয়োজিত ওই পুজোর আবশ্যিক উপকরণ গঙ্গার জল। এলাকার এক বাসিন্দা দক্ষিণবঙ্গ থেকে জল সংগ্রহ করে এনেছেন। ১০৮টি পদ্মফুলও ওই পুজোয় লাগে। বংশানুক্রমে প্রতিমা গড়ছেন শিল্পী বাবু পাল। পুজো কমিটির সম্পাদক অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুজোয় বাসিন্দাদের বাড়তি আবেগ জড়িয়ে রয়েছে।” সপ্তমী থেকে নবমী প্রসাদ বিলির কর্মসূচি নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। মহাষ্টমীতে অন্তত ৫ কুইন্ট্যাল চাল ডালের খিচুড়ি তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। দুঃস্থদের বস্ত্রদানও প্রতি বছরের রীতি। পুজো কমিটির সদস্য অভিজিৎ সরকার বলেন, “মহাষ্টমীর সকালে ২০০ জন দুঃস্থ বাসিন্দাকে বস্ত্র বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

দেবীবন্দনায় রেল-কর্মীরা
রেল কর্মীদের চাঁদায় ভরসা করেই পুজো। তবে আলিপুরদুয়ার জংশন রেল কলোনির পুজোয় নিষ্ঠার খামতি নেই। আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ৮ কিমি দূরে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে সদর দফতর এলাকায় রয়েছে তিন হাজার রেল কর্মীর আবাসন। উদ্যোক্তারা জানান, প্রতিটি কলোনি বা পাড়ায় নির্দিষ্ট সংখ্যক আবাসন রয়েছে। তার উপর ভিত্তি করে প্রতিবছর পুজোর বাজেট তৈরি হয়। রেল কর্মী সংগঠনের নেতা বিজন দেব রায় বলেন, “প্রথম দিকে রেল শ্রমিক ও অফিসারেরা সামান্য টাকা চাঁদা তুলে পুজো শুরু করেন। নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো হয়।” অফির্সাস কলোনির পুজোর উদ্যোক্তা অনুপ চৌধুরী, জানান, কাপড়ের মণ্ডপ হয়। একচালা প্রতিমা। ষষ্ঠীর বোধন থেকে দশমীতে বিদায় সবেতেই মহিলাদের অংশগ্রহণ। পুজোর সময় লেনিন ও হাসপাতাল কলোনির পুজো উদ্যোক্তা সৈকত চৌধুরী জানান, অল্প বাজেটের পুজো বলে থিমের মণ্ডপ তৈরি সম্ভব হয় না। চাঁদার জোরাজুরিও হয় না। পাড়ার সবাইকে নিয়ে আনন্দ করা লক্ষ্য। অরবিন্দ কলোনির উদ্যোক্তা দীপশিখা ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের মণ্ডপের সামনে ছয় মাথা মোড়ে পুজোর তিন দিন তিনটে রাস্তা বন্ধ করে সবাই মিলে আড্ডা মারা হয়।”

৫ দিনের মনসা পুজো ফুলঘরায়
দুর্গা পুজোর তিথি নক্ষত্র মেনে ৫ দিন মনসার আরাধনা করেন বালুরঘাটের ফুলঘরা গ্রামের মানুষ। আত্রেয়ী নদীর ধারে বোয়ালদার অঞ্চলে জল জঙ্গলে ঘেরা ফুলঘরায় সাপ আধিক্য বেশি ছিল। বাসিন্দাদের কথায়, “স্বপ্নাদেশ পেয়ে গ্রামে বেদি প্রতিষ্ঠা করে বাঁশের বেড়ার মন্দিরে দুর্গাপুজোর তিথিতে শুরু হয়েছিল মনসা পুজো। তার পর সাপের দাপট কমে যায়। সেই থেকে দেবীর কৃপায় কৃতজ্ঞ হয়ে বাসিন্দারা মনসাদেবীর পুজো শুরু করেন।” কালে কালে এই বেদিতে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে পাকা মন্দির। মা মনসা বারোয়ারি মন্দির কমিটি গড়ে সেখানে দুর্গাপুজোর রীতি নিয়ম মেনে মনসার পুজো হচ্ছে। পুজো কমিটির বিনিময় মোহান্ত, রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, “এই পুজো ৩০০ বছরের পুরনো। পুরোহিত থেকে ঢাকি, মৃৎশিল্পী বংশ পরম্পরায় পুজোর সঙ্গে যুক্ত।” পুজোর বৈশিষ্ট্য, গোটা গ্রামের মানুষ এই ক’টা দিন নিরামিষ খেয়ে পুজোয় সামিল হন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.