বিনোদন নিজের মতো করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেই
সুন্দরী প্রতিযোগিতায় যোগ বহরমপুরে

ক কালের সুবে বাংলার রাজধানী কয়েক কদম দূরেই। কিন্তু ইতিহাস ছেড়ে এ কালের রাস্তায় হাঁটতেও কুণ্ঠা ঝেড়ে ফেলল সুপ্রাচীন শহর বহরমপুর।
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে ‘মুর্শিদাবাদের সেরা সুন্দরী’ শুরু হয়েছে বহরমপুরের এক হোটেলে। ওই হোটেল কর্তৃপক্ষই প্রতিযোগিতার আয়োজক। বহরমপুরের কদবেলতলায় ওই হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলে গত ১ অক্টোবর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ৪০ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে প্রাথমিক বাছাই পর্ব চলে। শেষ পর্যন্ত বেছে নেওয়া হয়েছে ১০ জনকে। আগামী ৬ অক্টোবর তাঁদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হবে মুর্শিদাবাদের সেরা সুন্দরীকে। তার ৪৮ ঘন্টা আগে থেকেই সেরা সুন্দরীর শিরোপা কে পাবেন, তাই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন।
পুজোর মুখে সেরা সুন্দরীর ওই প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সাড়াও মিলেছে। অংশগ্রহণকারীরাও ওই প্রতিযোগিতাকে দেখছেন পুজোয় চার দিন সুন্দর করে নিজেদের রাঙিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ‘মহড়া’ হিসেবে। আয়োজক সংস্থার পক্ষে হোটেল মালিকের অন্যতম সুপর্ণা সাহা বলেন, “গত কয়েক বছরে মুর্শিদাবাদ জেলা তথা বহরমপুর শহর বদলে গিয়েছে। শপিং মল থেকে ফেসবুক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা মানুষের মননের দিক থেকেও বদল ঘটেছে। শহরের এই রুপান্তরটাকেই তুলে ধরতে চেয়েছি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে। অন্য শহরের মেয়েদের তুলনায় আমাদের জেলার মেয়েরাও যে পিছিয়ে নেই, সেটাও প্রমাণ করার ছিল। সেই দিক থেকে আমরা সফল।”
বহরমপুরের হোটেলে প্রতিযোগীরা। —নিজস্ব চিত্র।
ওই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় মুর্শিদাবাদের সব থেকে পিছিয়ে পড়া ডোমকল থেকে যেমন প্রতিযোগী এসেছিলেন, তেমনই বর্ধমান থেকে দিদির বাড়ি বহরমপুরে বেড়াতে আসা তরুণীও যোগ দেন। প্রতিযোগীদের মধ্যে কলেজের অতিথি অধ্যাপক থেকে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীও ছিলেন। কোনও প্রতিযোগী আবার তিন বছরের, কেউ পাঁচ বছরের সন্তানকে বাড়িতে রেখে প্রতিযোগিতার টানে এসেছেন। অবিবাহিতদের সঙ্গে তাঁরা র্যাম্পে সমান তালে হাঁটেন। সুপর্ণাদেবী বলেন, “প্রতিযোগিতায় বয়সের ঊর্ধ্ব ও নিম্নসীমা ছিল ১৮ থেকে ৩০। বাছাই পর্বে প্রতিযোগীদের চারটে ধাপ পেরোতে হয়েছে।”
শুরুতেই প্রতিযোগীরা র্যাম্পে সমবেত ঝড় তোলেন। পরে একক ‘র্যাম্প ওয়াক’ করতে হয়েছে তাঁদের। বিচারক ছিলেন বহরমপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। রাজ্য-রাজনীতি থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ের উপরে বিচারকদের ছুঁড়ে দেওয়া প্রশ্নবাণের সামনেও সাবলীল ছিলেন তাঁরা।
প্রতিযোগীদের মধ্যে সাবিনা নাজনিন থাকেন প্রত্যন্ত গ্রাম ডোমকলে। সেখানে একটি নাচের স্কুল চালান। ফিল্ম স্টাডিজ নিয়ে বহরমপুর কলেজ থেকে পাশ করার পরে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পরে তিনি রবীন্দ্রভারতী থেকে এমএ পাস করেন। তাঁর কথায়, “অর্থনৈতিক দিক থেকে মুর্শিদাবাদ পিছিয়ে পড়া জেলা হতে পারে, কিন্তু শিক্ষা-সংস্কৃতি-রুচির দিক থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেয়। জেলার মেয়েরা এখন কিছু করে দেখানোর তাগিদ অনুভব করছেন। সেই তাগিদ থেকে আমিও ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। আমার মা নিজের মতো করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। স্বামীও আমার সেই স্বপ্নে সামিল। ফলে ৬৫ কিমি দূরের শহরে গিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে।”
সাংবাদিকতা ও গণ মাধ্যমের ছাত্রী মুনমুন সেনগুপ্ত এখন বহরমপুর গার্লস কলেজের কমিউনিকেটিভ ইংলিশ-এর অতিথি অধ্যাপক। তিনি বলেন, “এর আগে আমি অদ্বিতীয়া সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ট্রফি জিতেছি। নিজের একটি আলাদা পরিচয় গড়ে তোলার জন্যই এই প্রতিযোগিতায় এসেছি।” প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের আগে ওই ১০ জন প্রতিযোগীকে ‘গ্রুমিং’ চলছে। বাছাই পর্বে নিজেরা বাড়িতে সেজে এলেও চূড়ান্ত পর্বে সাজানোর জন্য কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসা হচ্ছে। বিচারক হিসেবে হাজির থাকবেন অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী পায়েল রায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.