|
|
|
|
আমরা সবাই রাজা |
আমাদের সাইবার
রাজত্বে। চাইলেই শহরের মেয়র। চাইলেই বহুজাতিক সংস্থার প্রধান। লিখছেন অরিজিৎ চক্রবর্তী |
• সোমা সরকার। বয়স উনিশ। তিন সন্তানের মা। দু’টি ছেলে, এক মেয়ে।
• অঙ্কিত বর্মন। বয়স একুশ। এক বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির সিইও।
• দেবাদ্রিতা আচার্য। বয়স কুড়ি। এক শহরের মেয়র। |
না না না। ভুলেও ভাববেন না যে, টিন এজ প্রেগনেন্সি বা অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার কথা বলছি। আসলে সব চরিত্রই কাল্পনিক। যদিও এই চরিত্রগুলোকে চালানোর ব্যক্তিরা ঘোর বাস্তব।
ওয়েলকাম টু অনলাইন রোল প্লেয়িং গেমস। যার জ্বরে আক্রান্ত প্রায় কুড়ি কোটি জেন ওয়াই। কিন্তু কী এই রোল প্লেয়িং গেমস?
খায় না মাথায় দেয়?
সহজ ভাবে বলতে গেলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে খেলা গেমস। যাতে কোনও খেলোয়াড় তার পছন্দ মতো চরিত্র বা গ্র্যাভেটার তৈরি করে নেবে। তার পর সাইবার জগতে ওই চরিত্রকে চালাবে। সেই চরিত্র হতে পারে কোনও কোম্পানির সিইও। বা কোনও শহরের মেয়র। কিংবা নিদেন পক্ষে কোনও রেস্তোরাঁর মালিক। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক হওয়ায় বন্ধুদেরও সামিল করতে পারবেন আপনার এই কল্পনার জগতে।
এখানেই অন্য গেমসের থেকে আলাদা রোল প্লেয়িং গেমস। অনলাইন গেম ডিজাইনার অভিরূপ রায় জানালেন, “রোল প্লেয়িং গেমসে কোনও জেতা-হারা নেই। মাল্টি প্লেয়ার গেমস, কিন্তু সবাইকে একসঙ্গে খেলতে হবে এমন মাথার দিব্যিও কেউ দেয়নি! নিড ফর স্পিড-য়ের মতো এখানে আপনাকে শুধু জিতলে হবে না, সঙ্গী খেলোয়াড়কে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে লক্ষ্যের দিকে।” বাস্তবে যেমন হয়। ‘গল্প হলেও সত্যি’!
আমি তো এমনি এমনি খেলি
যারা খেলছে, তারা কীসের টানে পড়ে আছে রোল প্লেয়িং গেমসে? এক গেম অ্যাডিক্ট সোমা সরকার জানালেন, “কেন খেলি এক কথায় বলতে পারব না। আগে যে গেমসগুলো বাজারে ছিল, সে সবই তো অ্যাকশন গেমস কী ফুটবল। কিন্তু রয়্যাল স্টোরি বা প্যান্ডা জ্যামের মতো গেমসগুলো আমারও খেলতে ভাল লাগে। জেতা-হারার চিন্তা নেই, কিন্তু খুব মজা পাই। লেকচার-টিউশন-বাবা-মায়ের খিচখিচ থেকে অনেক রিল্যাক্সডও করে। এখন তো ফোনেও গেমসগুলো খেলা যায়। তাই ক্লাসের ফাঁকেও লক্ষ রাখি আমার গেমসের বাচ্চাদের ওপর!” |
|
কিন্তু টিনএজে পৌঁছে রোল প্লেয়িং গেমসে আকৃষ্ট হওয়াটা ছেলেমানুষি নয়? “অবশ্যই ছেলেমানুষি। তাতে কী? কথায় আছে না, মনে আমরা কখনও বুড়িয়ে যাই না। তাই খামখা বড় সাজতে যাব কেন?” জানালেন রুমা সাহা। পেট রেসকিউ, জুয়েল এপিকে ডুবে থাকেন দিনের অনেকটা সময়।
নেই তাই খেলছ
ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেন ওয়াই ডুবে থাকছে গেমে। মাঠে গিয়ে ফুটবল খেলার বদলে। সেটার কারণ কী? প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অংশুমান সরকারও লক্ষ করেছেন রোল প্লেয়িং গেমসের প্রতি তাঁর ছাত্রদের আগ্রহ। বললেন, “এখন তো খেলার মাঠের সংখ্যা এমনিতেই কম। তাই আউটডোর গেমস যে খেলবে তার জো নেই। আর প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে অন্যের ভূমিকায় কিছু সময় কাটানোর মধ্যে দিয়ে রিল্যাক্সড্ হওয়ারও প্রচুর সুযোগ। সেটাই কাজে লাগাচ্ছে এরা।”
নিখাদ মজা, কিছু সময় চিন্তামুক্ত কাটানো এ সবই যে রোল প্লেয়িং গেমসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বর্তমান প্রজন্মকে, সে কথা মানছেন মনস্তত্ত্ববিদ ডা. জয়রঞ্জন রামও। “আমি তো বলব, রোল প্লেয়িং গেমস অনেক ভাল। রক্তপাত, দুর্ধষ গতিতে গাড়ি চালানোর মধ্যেও রিল্যাক্স করার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কিন্তু সোস্যাল অনলাইন গেমসেও তার সুযোগ কম নেই। বরং অনেক বেশি। এই গেমসগুলোতে জেতা-হারার ভাবনামুক্ত হয়ে খেলার মধ্যে সেটা লুকিয়ে আছে। রক্ত না-ঝরিয়েও যে শহরের প্রধান হওয়া যায়, সেটা তো রোল প্লেয়িং গেমসই দেখাল,” হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
ফেসবুকের রিকোয়েস্ট পেজটা একবার খুলে দেখবেন না কি! বলা যায় না ধুঁকতে থাকা কোনও কোম্পানি বেঁচেও যেতে পারে আপনার অসাধারণ কোনও পলিসিতে। সত্যি না-ই বা হল, পুজোর আগে অন্তত নিজের লুকোনো ক্ষমতাটা তো বুঝতে পারবেন।
|
জনপ্রিয় পাঁচ |
• ক্রিমিনাল মাইন্ডস: এক সিরিয়াল কিলারের মনের গভীরে গিয়ে তদন্ত চালাতে হবে
•
রয়্যাল স্টোরি: আপনার নিজের রাজত্বে আপনিই রাজা। যত্ন নিয়ে নিজের রাজত্ব বাড়াতে হবে
•
সিটিভিল: আপনি শহরের প্রধান। আপনার দায়িত্ব শহরকে গড়ে তোলা। বাইরের আক্রমণ থেকেও বাঁচাতে হবে শহরকে
•
পেট রেসকিউ সাগা: প্রায় তেইশ রকম পাজল সমাধান করতে হবে
•
অ্যাসাসিন ক্রিড: নাইটদের মতো যুদ্ধ করতে হবে আপনাকে। তাতেই নির্ভর করবে আপনার বাঁচা-মরা |
|
আনাচে কানাচে |
|
‘বস’ যখন ক্যামেরাম্যান: একটি বিজ্ঞাপনের ফোটোশ্যুটের আগে
আনন্দplus-এর লেন্সের সামনে জিৎ। |
|
আয় তবে সহচরী: এক রেস্তোরাঁয় চুটিয়ে আইসক্রিমের মজা নিলেন
ইন্দ্রাণী সেন ও শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। |
|
|
|
|
|