ঝাঁ চকচকে রানওয়ে, প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিসসব তৈরি। কিন্তু দুর্গাপুরের অন্ডালে বিমানবন্দর চালু হওয়ার পথে এখন বাধা রানওয়ের উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের লাইন। সেই লাইন বিমানবন্দর এড়িয়ে অন্য এলাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাজী নজরুল ইসলামের নামে এই বিমানবন্দরের নামকরণ করে যান। জানিয়ে দেন, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকে এখানে উড়ান চালু হবে।
তা সত্ত্বেও সংশয় রয়ে যায় রানওয়ের উপর দিয়ে আড়াআড়ি যাওয়া ডিভিসি-র বিদ্যুতের লাইন। এই লাইনের জন্যই ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর ছাড়পত্র এখনও মেলেনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন উপস্থিত সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি সংস্থার কর্তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান।
বিমাননগরী নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রপলিস (বিএপিএল) সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুতের লাইন ও টাওয়ার অন্যত্র সরাতে প্রায় ৭০ একর জমি দরকার। তা সরাসরি জমি মালিকদের জন্য কিনতে তারা তৈরি। কিন্তু জমি মালিকদের সবাই জমি দেওয়ার ব্যাপারে একমত নন। স্থানীয় জমি বাঁচাও কমিটির নেতা দোনা গোস্বামীর দাবি, বিদ্যুতের লাইন নিয়ে যেতে যতটুকু প্রয়োজন, শুধু সেটুকুই কিনবে বিএপিএল। সেক্ষেত্রে বাকি জমিতে চাষ করতে সমস্যা হবে। তা ছাড়া, বিমানবন্দর এড়িয়ে নিয়ে যেতে হলে বিদ্যুতের লাইন যাবে লোকালয় দিয়ে। উচ্চ পরিবাহী তার কখনও ছিঁড়ে পড়লে বিপদ ঘটতে পারে। উঁচু বাড়ি নির্মাণের অনুমতি পেতেও সমস্যা হতে পারে। এ সব কারণে অনেকে জমি দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী নন বলে দোনাবাবুর দাবি।
মঙ্গলবার প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক হয় দুর্গাপুর মহকুমাশাসকের অফিসে। ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) , বিএপিএলের অন্যতম প্রকল্প আধিকারিক কল্লোল শীল, অন্ডাল, ফরিদপুর (লাউদোহা) ও পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ, স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যেরা-সহ অনেকে। বিমানবন্দর এড়িয়ে বিদ্যুতের লাইন নিয়ে যেতে হলে তা অন্ডালের দু’টি ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে যাবে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুতের লাইন সরানোর প্রথম ধাপ হিসাবে এলাকায় সমীক্ষার কাজ শুরু হবে। পঞ্চায়েত সদস্যেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিষয়টির গুরুত্ব বোঝাবেন।
প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “গ্রামবাসীদের কাছে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের গ্রহণযোগ্যতা সরকারি আধিকারিকদের থেকেও বেশি। তাই তাঁদের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আশা করা যায়, বিষয়টি মিটে যাবে।” |