এক নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহকারীর দশ বছরের ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে বুদবুদ থানার কোটা-চণ্ডীপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কিষাণ কর্মকার নামে ওই ব্যবসায়ীর ছেলে সায়ক টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছিল। অভিযোগ, বাড়ির কিছুটা আগে মোটরবাইকে চড়ে দু’জন এসে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা ফোন করে ১২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলেও কিষাণবাবুর দাবি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড়ের নির্মীয়মান সার কারখানা গড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের সময় স্থানীয় অনেকের সঙ্গে জমি যায় কিষাণ কর্মকারের। জমিদাতাদের কমিটি গড়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন তিনি। পরে অবশ্য জমির বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিষয়টি কমিটি মিটিয়ে নেয়। সেই টাকায় জমিদাতাদের কেউ গাড়ি কিনে তা ভাড়া খাটাতে শুরু করে, আবার কেউ নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের ব্যবসা শুরু করে।
মূলত নির্মীয়মান সার কারখানাতেই সামগ্রী সরবরাহের ব্যবসা করেন তাঁরা। গাড়িও ভাড়া খাটে সেখানেই। কিষাণবাবুও ওই কারখানাতেই নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করেন। ব্যবসায় লাভও ভালই বলে জানান তিনি।
কিষাণবাবুর ছেলে পানাগড়ের একটি বেসরকারি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। রোজ সন্ধ্যায় গ্রামেরই অন্য পাড়ায় টিউশন পড়তে যায় সে। এ দিনও সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ টিউশন সেরে একাই বাড়ি ফিরছিল সে। তখনই বাড়ির কিছুটা আগে একটি মোটরবাইকে দু’জন এসে তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। কিষাণবাবু বলেন, “পরে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ নাগাদ একটা মোবাইল থেকে ফোন আসে। বলা হয়, ‘খুব বেড়েছিস। পার্টি ফান্ডে ১২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ জমা করে দে। পুলিশকে জানাবি না। তাহলে ছেলেকে ফিরে পাবি না’। এরপরেই ফোনটি কেটে যায়।” রাতেই বুদবুদ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিষাণবাবু জানান, তারপর থেকে ওই মোবাইলটি বন্ধ রয়েছে। তবে কোন দলের তহবিলে মুক্তিপণের টাকা দিতে বলা হয়েছে তা বুঝতে পারেননি তিনি। ঘটনার পিছনে ব্যবসায়িক বিবাদ রয়েছে নাকি অন্য কিছু, তা বুঝে উঠতে পারছেন না কিষাণবাবু। তিনি বলেন, “গ্রামের অনেকেই আমার উত্থান ভাল চোখে নেয়নি। তারাই কেউ এমন বিপদে ফেলল কি না বুঝতে পারছি না।” জেলা পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জা জানান, অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। |