বঙ্গোপসাগরে জন্মে সেখানে থিতু হয়েই নাকাল করছিল নিম্নচাপ। অবশেষে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার গোঁ ছেড়ে গা-ঝাড়া দিয়েছে সে। তবে নিম্নচাপটি নড়লেও তারই দাপটে এখনও চলছে বর্ষণ। তার শক্তি পুরোপুরি ক্ষয় না-হওয়া পর্যন্ত বৃষ্টি থামার আশা নেই।
আসলে শনিবার ওড়িশা উপকূলের কাছে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি মধ্য ভারতের ঘূর্ণাবর্তের বিপরীত চাপেই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছিল। তাই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কিছুতেই বন্ধ হচ্ছিল না। আবহবিদেরা বলেছিলেন, ওই নিম্নচাপ স্থলভূমিতে ঢুকে দুর্বল না-হলে বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গকে ছাড়বে না। |
বৃষ্টিভেজা ধর্মতলা। ছবি: প্রদীপ আদক। |
সে-ক্ষেত্রে প্রথম শর্ত ছিল, ঘূর্ণাবর্তটিকে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে হবে।
তিন দিন একই জায়গায় থাকার পরে মঙ্গলবার কিছুটা গতি পেয়েছে নিম্নচাপ। মধ্য ভারতের ঘূর্ণাবর্ত দুর্বল হয়ে যাওয়ায় নিম্নচাপটি এ দিন দুপুরের পরে স্থান পরিবর্তন করতে শুরু করে। আজ, বুধবার সকালে সেটি স্থলভূমিতে ঢুকে দুর্বল হয়ে যাবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। তার জেরে বুধবার বিকেল থেকেই আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে বলে জানান আবহবিদেরা। কমবে বৃষ্টিও।
নিম্নচাপ বিদায়ের পথ ধরলেও এখনই বৃষ্টি থেকে পুরোপুরি মুক্তির আশা কম। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে সরে গেলেও আগামী কয়েক দিন অল্পবিস্তর বৃষ্টি চলবে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই। কারণ, নিম্নচাপটি একই জায়গায় তিন দিন দাঁড়িয়ে থাকার সময়েই মৌসুমি অক্ষরেখাকে অতি মাত্রায় সক্রিয় করে দিয়ে গিয়েছে। তার পরে আবহাওয়া কেমন থাকবে, সেটা নির্ভর করবে পরবর্তী বায়ুপ্রবাহের উপরে।
চলতি মরসুমে জুন থেকেই উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘনঘন নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। স্থলভাগে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্তও। তার ফলে মৌসুমি অক্ষরেখা গত চার মাসের অধিকাংশ সময়েই অতি সক্রিয় থেকেছে। বিদায়বেলাতেও মৌসুমি অক্ষরেখার সক্রিয়তা বন্ধ না-হওয়ায় আবহবিদেরা চিন্তিত। তাঁরা বলছেন, বর্তমান নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে গেলেও নতুন কোনও ঘূর্ণাবর্ত যে-কোনও সময়ে মৌসুমি বায়ুকে সক্রিয় করে তুলতে পারে। সেই আশঙ্কা আছে বলে পুজোর চার দিন আবহাওয়া কেমন যাবে, এখনই তার কোনও পূর্বাভাস দিতে চাইছেন না আবহবিদেরা। |