প্রতিবাদী মঞ্চ ছেড়েছিলেন আগেই। এ বার গ্রামবাসীদের ডাকা সভায় হাজির হলেন না কামদুনিতে ধর্ষিত ও নিহত কলেজছাত্রীর পরিবার।
ওই পরিবারের পক্ষ থেকে কামদুনি প্রতিবাদী মঞ্চের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছে। কেন এই অভিযোগ করা হয়েছে, তা জানার জন্য ছাত্রীর পরিবারের লোকজনকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রামের একটি সভায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ওই সভায় হাজির হয়েছিলেন গ্রামের বহু মানুষ। কিন্তু নিহত নির্যাতিতার ছোট ভাই গ্রামের লোকজনকে জানিয়ে দেন, তিনি এবং তাঁর বাবা-মা সভায় যাবেন না। ছাত্রীর বড় দাদা চাকরির নিয়োগপত্র পেয়ে এ দিন বাড়ি ফেরেননি। তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন।
ওই ছাত্রীর পরিবারের কেউ সভায় হাজির হননি দেখে গ্রামের লোকজন এবং প্রতিবাদী মঞ্চের সদস্যেরা তাঁদের বাড়ি যান। কিন্তু বাড়ির সামনে মোতায়েন থাকা পুলিশ গ্রামের লোকজনকে সেখানে ঢুকতে দেয়নি। গ্রামের লোকজন বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছেন দেখে ছোট ভাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন।
গ্রামের লোকজন এবং প্রতিবাদী মঞ্চের প্রতিনিধিরা নিহতের ছোট ভাইকে বলেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা সাহায্য এবং সরকারি চাকরি নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের পরিবারের নিজস্ব ব্যাপার। এই বিষয়ে গ্রামের কেউই কিছু বলতে চান না। কিন্তু মঞ্চের কর্মকর্তারা মুখোশের আড়ালে নিজেদের আখের গোছাতে কয়েকটি স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক দল এবং এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যমের কুপরামর্শে দোষীদের আড়াল করে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের রাস্তায় নেমে পড়েছে বলে যে-অভিযোগ করা হয়েছে, তার ভিত্তি কী?
কলেজছাত্রীর ছোট ভাই গ্রামের লোকজনকে জানিয়ে দেন, এই ব্যাপারে তাঁর কিছু বলার নেই। তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। এক সময় ছোট ভাই গ্রামের লোকজনকে বলেন, তিনি সভায় যেতে রাজি আছেন। গ্রামের লোকজন তাঁকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন তাঁর বাবা ও মাকে সভায় নিয়ে যান। গ্রামবাসীদের অনুরোধ শুনে ছোট ভাই ঘরের ভিতরে যান। বাড়ির সামনে থাকা পুলিশকর্মীদের কয়েক জনও ঘরের ভিতরে ঢোকেন। কিছু পরে ছোট ভাই ঘর থেকে বেরিয়ে এসে জানিয়ে দেন, তাঁরা কেউই সভায় যাবেন না।
পরে ওই সভায় গ্রামবাসীরা ঠিক করেন, এই অভিযোগ সম্পর্কে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে মৌসুমী কয়াল বলেন, “প্রতিবাদী মুখ হিসেবে একটি টিভি চ্যানেল থেকে টুম্পা কয়াল এবং আমাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকার এক অংশ প্রতিবাদী মঞ্চকে আর বাকিটা ওই পরিবারের হাতেই তুলে দিয়েছিলাম। এর পরেও ওঁরা কেন এই ধরনের অভিযোগ তুললেন, বুঝতে পারছি না।” |