|
|
|
|
সাজা ঘোষণার আগে জেলে গীতাই ভরসা লালুর
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
জেলে গীতা পড়ছেন লালুপ্রসাদ যাদব।
রাঁচির বিরসা মুণ্ডা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি, পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আজ সকালে ওই ধর্মগ্রন্থ পৌঁছে দিয়েছেন আরজেডি নেতারা।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিশেষ সিবিআই আদালতের সাজা ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন লালু। শাস্তির জেরে সাংসদ পদও হারাতে চলেছেন। রাজনৈতিক ‘বানপ্রস্থ’-এর মতো পরিস্থিতিতে রয়েছেন তিনি।
তাই এখন তাঁর ভরসা গীতা-ই।
লালুর দলের নেতাদেরও আস্থা রয়েছে ওই ধর্মগ্রন্থের উপরই। আরজেডি নেতা রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ বলেন, “লালুজির কাছে গীতা পৌঁছে দিয়েছি। তাঁকে ১০টি করে শ্লোক পড়তে বলেছি। আমাদের বিশ্বাস, অর্ধেক গীতা পড়লেই তিনি জেল থেকে মুক্তি পাবেন।” রঘুবংশ জানান, সিবিআই আদালতের রায় ঘোষণার পর দ্রুত তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।
সোমবার পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির ‘চাইবাসা ট্রেজারি মামলা’ চলাকালীন আদালত-কক্ষে হনুমান চালিসা পড়তে দেখা গিয়েছিল লালু-জমানার বিরোধী নেতা জগন্নাথ মিশ্রকে। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনিও। দলের শীর্ষ নেতা বন্দি রাঁচির জেলে। তাঁর দলের নেতৃত্ব তাই হাজির ঝাড়খণ্ডের রাজধানীতে। বিরসা জেলের সামনে দাঁড়িয়ে আজ তাঁরা আঙুল তুললেন নীতীশ কুমার ও বিজেপি-র দিকে। আরজেডি নেতাদের দাবি, নীতীশ, বিজেপি-র চক্রান্তেই তাদের দেবতা-সম নেতার এই হাল। |
লালুর জন্য জেলে গীতা নিয়ে যাচ্ছেন রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ। ছবি: হরদীপ সিংহ। |
লালু-ঘনিষ্ঠ আরজেডি নেতা রামকৃপাল যাদব বলেন, “লালুজি, আমরা সবাই এ জন্য প্রস্তুত ছিলাম। উনি ভেঙে পড়েননি। নির্দেশ দিয়েছেন জেডিইউ, বিজেপি-র চক্রান্তের কথা বিহারের গ্রামে-গ্রামে প্রচার করতে। জনতাই এর জবাব দেবেন।”
বিরসা মুন্ডা জেল সূত্রের খবর, ভিআইপি ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে লালুপ্রসাদ, জেহানাবাদের জেডিইউ সাংসদ জগদীশ শর্মা, প্রাক্তন আরজেডি সাংসদ রবীন্দ্রকুমার রানাকে। ওই ওয়ার্ডে ৯টি সেল রয়েছে। লালু প্রথমটিতে আছেন। সেলে টেলিভিশন নেই। খবরের কাগজ এবং পছন্দমতো বই পাচ্ছেন। চাইলে এক সহকারীকেও সঙ্গে রাখতে পারেন। জেলের বাইরের খাবারও খেতে পারেন। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে সহকারী এক বন্দিকে সঙ্গে নিয়ে নিরামিষ খাবার রান্না করে খেয়েছেন লালু। কারও সঙ্গে বিশেষ কথা বলেননি। ঘুমিয়েছেনও অনেক দেরি করে।
আজ সকালে জেলের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন বিহার, ঝাড়খণ্ডের আরজেডি নেতারা। দলীয় সূত্রের খবর, সকালে প্রাতরাশ নিয়ে জেলে গিয়েছিলেন মন্ত্রী অন্নপূর্ণাদেবী। ঝাড়খণ্ডের অন্য আরজেডি মন্ত্রী সুরেশ পাসোয়ান দুপুরের খাবার পৌঁছে দেন। জেলের নিয়মে, বিচারাধীন বন্দির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। প্রতিদিন এক জনই দেখা করার অনুমতি পান। সাজাপ্রাপ্ত বন্দির সঙ্গে পনেরো দিনে এক বার কোনও এক জন দেখা করতে পারেন। কিন্তু আজ ছবিটা ছিল অন্য রকম। দলে দলে আরজেডি নেতা জেলের ভিতরে গিয়ে লালুর সঙ্গে দেখা করেন। জেল সূত্রে খবর, নিজের পছন্দের লোকের সঙ্গে দেখা করতে দুপুর ৩টের পরও লালুকে দ্বিতীয় দফায় সময় বরাদ্দ করা হয়।
লালুপ্রসাদ কি জেলে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন? ঝাড়খণ্ডের আইজি (কারা) এস বি শর্মা বলেন, “উনি ভিআইপি রাজনৈতিক বন্দি। নিয়ম অনুযায়ী তাঁর যেটুকু সুবিধা প্রাপ্য, তাই দেওয়া হচ্ছে। বেশি কিছুই করা হচ্ছে না।”
|
পুরনো খবর: এ কী হল! রায় শুনেই ম্লান মুখ |
|
|
|
|
|