শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা কাণ্ডে অন্তত ৯ কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতির মামলায় জামিন পেলেন অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কণর্ধার সুব্রত দত্ত। সোমবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (ফাস্ট স্ট্র্যাক কোর্ট) তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। অন্য দিকে ওই ক্যামেরা কাণ্ডে এসজেডিএ’র বাস্তুকার সপ্তর্ষি পালকেও পুলিশ গ্রেফতার দেখায়। এ দিন ওই মামলায় জামিন পান সপ্তর্ষি পাল-ও। তবে এসজেডিএ’র অন্যান্য প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে আরও একাধিক মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় তিনি জেল হেফাজতেই থাকছেন।
শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে গত বছর পুজোর আগে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল এসজেডিএ। তা ঘটা করে চালুও করা হয়। এর পরেই ওই সমস্ত ক্যামেরার মান এবং বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ ওঠে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের তরফে তদন্ত করে দেখাও হয়। এসজেডিএ’র তরফেও তদন্ত করার কথা জানানো হয়েছিল। পুলিশের তরফে ওই সমস্ত ক্যামেরা যথাযথ নেই জানিয়ে যেগুলি বুঝিয়ে দিতে বলা হয় এসজেডিএ কর্তৃপক্ষকে। এর পরেই এসজেডিএ’র তরফে ঠিকাদার সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে ওই সমস্ত ক্যামেরা কোথায় কী রয়েছে তা বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। এর পরেই ওই সমস্ত ক্যামেরা গভীর রাতে ঠিকাদার সংস্থার তরফে বদলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এসজেডিএ’র তরফে পুলিশে অভিযোগও জানানো হয়। এর পরেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা এম এস কোম্পানিস-এর কর্ণধার সুব্রত দত্তকে গ্রেফতার করা হয়। অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্টেটের আদালত থেকে তাঁকে জেল হেফাজতের রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন জানানো হলেও তা নাকচ হয়ে যায়। এর পরেই ১৮ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট)-এর কাছে জামিনের আবেদন করা হয়।
পুলিশ জানায়, প্রথমে বক্স ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। পরে সেগুলি বদলে পিটিজেড ক্যামেরা লাগানো হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডাবগ্রাম এলাকায় একটি বাড়ি থেকে আগে লাগানো বক্স ক্যামেরাগুলি বাজেয়াপ্ত করে। তবে তদন্তের মাঝপথে এসজেডিএ’র তরফে ঠিকাদার সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে ক্যামেরাগুলি বুঝিয়ে দিতে বলা নিয়েও পুলিশের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যে আধিকারিক ওই চিঠি দিয়েছেন তার ভূমিকাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
এ দিন আদালতে সরকারি পক্ষের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ বলেন, “সুব্রতবাবুর বাবা ক্যান্সারের রোগী। এবং যে ক্যামেরাগুলি লাগাতে তাঁকে বরাত দেওয়া হয়েছিল তিনি সেগুলি লাগিয়েও দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে জামিনের আবেদন করে সুব্রতবাবুর আইনজীবী।” সুব্রতবাবুর আইনজীবী সমীর ঘোষ জানান, যে ক্যামেরাগুলি বসানোর কথা ছিল তা সুব্রতবাবু লাগিয়ে দিয়েছেন। আদালত তাই আবেদনে সাড়া দিয়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন।
|