তার মাকে ট্রেন থেকে নামানোর সময়ে দুষ্কৃতীদের আটকাতে সহযাত্রীরা কেউ এগোননি বলে সাক্ষ্যে জানাল কাটোয়া ধর্ষণকাণ্ডে অভিযোগকারিণী মহিলার তেরো বছরের মেয়ে।
গত বৃহস্পতিবার কাটোয়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সৈয়দ নিয়াজুদ্দিন আজাদের এজলাসে প্রথম দিন সাক্ষ্য দিতে এসেই মেয়েটি দু’জনকে শনাক্ত করেছিল। সাক্ষ্যের শেষে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করতে শুরু করেন। সে দিন তা শেষ না হওয়ায় সোমবার ফের জেরা করা হয়।
গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি কাটোয়া-আমোদপুর ছোট রেলে (এখন ব্রডগেজের কাজ চলছে) ডাকাতির সময়ে দুষ্কৃতীরা ওই কিশোরীর মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে তার বিধবা মাকে নামিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। যে আট জনের নামে ডাকাতি ও ধর্ষণের অভিযোগ ছিল, তাদের অন্যতম কায়েশ শেখকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। মামলার সাক্ষ্য দিয়ে বীরভূমে ফেরার সময়ে মারা যায় দু’জন। বাকি চার জন জেলে এবং এক জন জামিনে ছাড়া আছে। ইতিমধ্যেই ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় রেজাউল মির্জা ও নয়ন শেখকে শনাক্ত করেছেন অভিযোগকারিণী ও তাঁর প্রত্যক্ষদর্শী মেয়ে। তৃতীয় যাকে মহিলা শনাক্ত করেছিলেন, সে দুর্ঘটনায় মৃতদের এক জন।
গত বুধবার ছোট রেলের গার্ড দিলীপকুমার সরকার তাঁর সাক্ষ্য জানিয়ে গিয়েছিলেন, দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ট্রেন থামাতে বাধ্য করেছিল। তিনি অবশ্য কোনও অভিযুক্তকে চিনতে পারেননি। আইনজীবীদের সূত্রের খবর, এ দিন জেল হাজতে থাকা কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামের সেন্টু শেখ অসুস্থ হয়ে পড়ায় জেরা শুরু করতে বেশ খানিকটা দেরি হয়। পরে অভিযুক্তের আইনজীবী প্রায় ৪০ মিনিট ধরে কিশোরাটিকে জেরা করেন। জেরায় সে জানায়, দুষ্কৃতীরা যখন তার মাকে জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তাঁকে বাঁচাতে কোনও যাত্রীই এগিয়ে আসেননি। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, জেরার মুখে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর শান্ত ভাবেই দিয়েছে মেয়েটি। সরকারি আইনজীবী কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় জানান, আজ, মঙ্গলবার নতুন করে সাক্ষ্যের দিন ঘোষণা করবেন বিচারক। |