পুরসভা, স্বাস্থ্য দফতর-সহ বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় গড়ে শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ এখনও সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী গত সোমবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসকের নেতৃত্বে ডেঙ্গি মোকাবিলায় বৈঠক করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না তা দেখার দায়িত্ব ওই কিমিটিকে দেওয়া হয়। দার্জিলিঙ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিককে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। তাঁর নেতৃত্বেই ওই কাজ হওয়ার কথা। ঠিক হয়েছিল সপ্তাহে অন্তত ১ বার বৈঠক করে কাজের পুরো বিষয়টি নিয়ে তাঁরা পর্যালোচনা করবেন। অথচ ৮ দিন পরেও কমিটির কোনও বৈঠক হয়নি। তাতেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজের তদারকি ঠিক মতো হচ্ছে কি না এবং সমস্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তা করা হচ্ছে কি না তা নিয়েই প্রশ্ন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীরবাবু বলেন, “এই সপ্তাহেই ফের বৈঠক করা হবে। তা ছাড়া ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ নিয়ে এর মধ্যেই জেলাশাসক বৈঠক করেছেন। যথাযথ ভাবেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজের তদারকি করা হচ্ছে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গির চিকিৎসায় নার্সিংহোমগুলির পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা বা চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ডেঙ্গি আক্রান্তদের পরিবারের লোকেরা। সে কারণে বিশেষজ্ঞ দলকে নিয়ে গত শনিবার শিলিগুড়ির ৫ টি নার্সিংহোম ঘুরে দেখেছে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।
অগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গি সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। অথচ কমিটি শুরু থেকেই তা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়নি বিশেষজ্ঞরাই সে কথা জানিয়েছিলেন। তাতে শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে অন্তত ১২০০। তার মধ্যে শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমার অন্যান্য অংশ মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৯০০। জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৩০০ জন। দেরিতে হলেও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য কমিটি গড়ে প্রশাসন। কিন্তু তার পরেও সেই কাজ আদৌ যথাযথ হচ্ছে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে পুরসভা, স্বাস্থ্য দফতর নিজেদের মতো আলাদা করে কাজ করছে। তা ছাড়া পূর্ত, সেচ দফতর, এসজেডিএ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মতো বিভিন্ন দফতরগুলিকে নিয়ে সতেচনতা প্রচারের কাজ হয়নি। ওই সমস্ত দফতরের অধীনে সে সমস্ত নির্মাণ কাজ চলছে সে সব জায়গাতেও যাতে জমা জল না থাকে সে জন্য সচেতনতা প্রচার জরুরি বলে অনেকেই মনে করেন। তা ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণকাজের জায়গায় জল জমে রয়েছে বলেও বাসিন্দারা
অভিযোগ করেছেন।
মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানিয়েছেন, আজ, সোমবার পুরসভার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার স্বাস্থ্য দফতর, শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এবং সমস্ত কাউন্সিলরদের ডাকা হয়েছে। এ দিন ৪১-৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিবিন্ন জায়গায় ঘুরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা প্রচারে যান মেয়র। ওই এলাকাতে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। তবে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজে গাফিলতির জন্য শহরে ৫, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডেও নতুন করে ওই রোগের সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ। |