বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের তৈরি করা আইনকে ‘অসম্পূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে আগেই ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের দাবি, রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিলটি ফেরত নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নতুন বিল ফের বিধানসভায় পেশ করে আবার তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
যদিও রাজ্য সরকারের কোনও মুখপাত্র বিষয়টি স্বীকার করেননি। সরকারি কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই বিলটি বাতিল করে নতুন বিল আনা হবে, না কেন্দ্রের আপত্তির বিষয়গুলি সংশোধন করে বিলটি ফের বিধানসভায় পেশ করা হবে তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, প্রতারক মালিকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা পিছিয়ে দিতেই কেন্দ্র বারে বারে বিলটি নিয়ে বাগড়া দিচ্ছে। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়াটাই তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বের। এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। রাজ্যের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “আজ, সোমবার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে টাকা ফেরত দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে। পুজোর আগে ১ লক্ষ মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কালীপুজোর পরে ফের ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হবে।” দরিদ্র কিছু আমানতকারীকে সোমবার ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
সারদার আমানতকারীদের টাকা কেন সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে অবশ্য রবিবার প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। তাদের মতে, জনগণের করের টাকা থেকে এ ভাবে জালিয়াতির দায় মেটানো নীতিসঙ্গত নয়, বেআইনিও বটে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন বলেন, “সারদা কেলেঙ্কারির ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে আলাদা তহবিল (হেড অব অ্যাকাউন্টস) খুলে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আমাদের ঘোরতর আপত্তির বিষয় সরকারি কোষাগার জনগণের সম্পত্তি। প্রতারকদের সম্পত্তি কেন বাজেয়াপ্ত না করে করের টাকা থেকে সারদার প্রতারিতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কেন?”
আমানতকারীদের টাকা ফেরতের দাবিতে বরাবরই সরব ছিল বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গ তুলেই সূর্যবাবু বলেন, “করের টাকা দিয়ে প্রতারণার দায় মেটানোর অর্থ অপরাধীদের আড়াল করা! শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত। আংশিক ভাবে হলেও তাঁদের যে দায় মেটানোর কথা, সেটা জনগণের টাকা দিয়ে করা হচ্ছে!” বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, অপরাধীদের সময় পাইয়ে দেওয়ার জন্যই অর্থলগ্নি সংস্থা-নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিলে ফাঁক রাখা হয়েছিল। যা শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। |