সাসপেন্ড হওয়ার পরে নিজের বক্তব্য জানাতে চেয়ে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির আহ্বায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কে চিঠি পাঠালেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ‘ব্যক্তিগতভাবে’ চিঠি দিয়েছেন তিনি।
২০ সেপ্টেম্বর উত্তর কলকাতায় এক রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে দল-বিরোধী মন্তব্যের জন্য শো-কজ করা হয় কুণালকে। তার পরেও প্রকাশ্যে দল-বিরোধী কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ায় শনিবার তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়।
কিন্তু রবিবার পর্যন্ত শো-কজের চিঠিই তিনি পাননি বলে পাল্টা দাবি করেছেন কুণাল। ফের সেই চিঠি পাঠানো হলে তিনি জবাব দিতে প্রস্তুত বলেই কুণাল দলীয় নেতৃত্বকে চিঠিতে লিখেছেন। বা তাঁকে ডাকলেও তিনি তাঁর বক্তব্য জানাতে চান বলে নেতৃত্বকে আবেদন করেছেন। কুণালের চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করলেও শো-কজের চিঠি না-পাওয়া নিয়ে সাংসদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি মুকুলবাবু। তাঁর বক্তব্য, “কুণাল কী বলছেন, তা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নই। কুণালের চিঠি দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেব। কমিটি তদন্ত করছে। তারাই খতিয়ে দেখবে।”
কুণাল-পর্বের মধ্যে এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আজ, সোমবার তৃণমূলের সাধারণ পরিষদের বর্ধিত সভায় মমতা এ ব্যাপারে দলের কর্মীদের বার্তা দিতে পারেন। নেতাজি ইন্ডোরের এই সভা থেকেই লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিতে দলের অভিমুখ কী হবে, দলনেত্রী তা ঠিক করে দিতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রের ইঙ্গিত। দলের সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে সদ্য নির্বাচিত ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পুরসভার কাউন্সিলরদের মমতা বুঝিয়ে দেবেন, পরিবর্তনের বাংলায় কী ভাবে দল ও সরকারের জন্য কাজ করতে হবে। এই সভা থেকেই দলের সাংগঠনিক বিষয় এবং আগামী কর্মসূচির বার্তা দেওয়া হতে পারে। কথা হতে পারে ২৫ নভেম্বরের ব্রিগেড সমাবেশ নিয়েও। কুণাল-জল্পনায় গুরুত্ব না দিয়ে মুকুলবাবু বলেন, “আমি অপেক্ষায়, কবে সিপিএম ও কংগ্রেস আড়াআড়ি ভেঙে যাবে!” কুণাল-পর্বকে অস্ত্র করে তৃণমূলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বহরমপুরে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির মুর্শিদাবাদ জেলা সম্মেলনের সূচনায় সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট বলেন, “সারদা-কাণ্ডের সময়েই কুণালকে সাসপেন্ড করা উচিত ছিল। দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হল। নীতির প্রশ্নে সাসপেন্ড করা হয়নি!” কুণাল-প্রশ্নে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কটাক্ষ, “আড়াই বছরেই এই! পাঁচ বছর থাকলে কী হবে!” তাঁর সংযোজন, “ভাল মানুষদের জন্য বিজেপি-র দরজা খোলা।” |