মিলল তরুণীর দেহ, ধস ফের পাণ্ডবেশ্বরে
সাঁকতোড়িয়ায় মাটি ফেটে ঢুকে যাওয়া তরুণীর দেহ অবশেষে পাওয়া গেল। তবে ধসে ঘরছাড়ারা অনেকে এখনও নিরাপদ আশ্রয় পাননি। এর মধ্যেই ফের একটি পরিত্যক্ত ইসিএল আবাসনের একাংশ ধসে পড়ল পাণ্ডবেশ্বরে।
ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবার ইতিমধ্যে নিজেরাই নিরাপদ জায়গায় চলে গিয়েছে। কিন্তু কয়েকটি পরিবার এখনও সাঁকতোড়িয়ার ১২ নম্বর বস্তির ক্লাবঘরে পড়ে আছে। তাদের জন্য মাস কয়েকের একটি অস্থায়ী শিবির বানানোর ব্যবস্থা করছে আসানসোল মহকুমা প্রশাসন। আজ, সোমবারের মধ্যে ঘরছাড়াদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যাবে বলে তাদের আশা।
বৃহস্পতিবার সাঁকতোড়িয়ার ১২ নম্বর বস্তিতে বাড়ির উঠোন ফেটে হেনা পারভিন জ্বলন্ত ভূগর্ভে ঢুকে যাওয়ার পরে চার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তার পর থেকেই তাকে বা তার দেহ উদ্ধার করার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু গর্তে ব্যাপক উত্তাপ থাকায় উদ্ধারকারী দল তার একেবারে কাছে যেতে পারছিল না। ইসিএলের নিরাপত্তা আধিরাকির এ কে বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ দিন বিকেলে বৃষ্টি নামায় উত্তাপ অনেকটা কমে যায়। গর্তের মুখের কাছে উঠে আসা মিথেন গ্যাসও অনেকটা নীচে চলে যায়।
বাঁকোলায় ধসে যাওয়া বাড়ি।
সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ উদ্ধারকারী দল ফের তল্লাশিতে নামে। শোভেল মেশিনের ডালায় চেপে গর্ত দিয়ে নীচে নামেন দলের দুই সদস্য নির্মল সিংহ এবং আর ডি সিংহ। প্রায় তিরিশ ফুট গভীরে একটি স্তরে পচে ওঠা দেহটি আটকে ছিল। ডালায় চাপিয়েই দেহটি উপরে তুলে নিয়ামতপুর পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠানো হয়েছে। আজ, সোমবার সেটি ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হেনার বাবা মুক্তার আনসারি বলেন, “অন্তত মেয়ের অন্ত্যেষ্টিটা করতে পারব।”
এ দিন দুপুরে আবার পাণ্ডবেশ্বরের বাঁকোলা এরিয়া সেন্টিনারি ইনক্লাইন কর্মী আবাসন এলাকায় ইসিএলের একটি একতলা পরিত্যক্ত বাড়ি ধসে পড়ে। শেখ আলতাব নামে এক রিকশাচালক সপরিবার সেখানে থাকতেন। তবে কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। তিনি আপাতত পাশেই নবগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু ওই আবাসন এলাকায় এখনও বহু পরিবার রয়েছে। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, এলাকাটি ধসপ্রবণ বলে ঘোষিত। আবাসনগুলিও পরিত্যক্ত। সেখানে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিচ্ছেন। কিছু দিনের মধ্যে আবাসনগুলি ভেঙে দেওয়া হবে।
সাঁকতোড়িয়ায় মাটি ফেটে ঢুকে যাওয়া তরুণীর খোঁজে তখন নামছেন
উদ্ধারকারী দলের দুই সদস্য। রবিবার সন্ধ্যায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার রাতেই হেনাদের বাড়ির আশপাশে আরও কিছু বাড়িতে ফাটল ধরায় সেগুলির বাসিন্দারা ঘরছাড়া হয়েছিলেন। তাঁদের ছেড়ে যাওয়া ফাঁকা ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে নীচের ভূগর্ভ ভরাট করার কাজ শুরু করেছে ইসিএল। কাজ শেষ হলে জায়গাটি কাঁটাতারের বেড়ায় ঘিরে দেওয়া হবে। মহকুমা প্রশাসন ও কুলটি পুরসভা ঘরছাড়াদের ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এখনও হয়নি।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, বর্ধমানের জেলাশাসক সাঁকতোড়িয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং পুনর্বাসন নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জেলাশাসকের নির্দেশে রবিবার মহকুমা প্রশাসনের আরও একটি পযর্বেক্ষক দল গোটা অঞ্চল ঘুরে দেখেছে।
মহকুমাশাসক জানান, প্রশাসনের তরফেও চাল, জামাকাপড় ও অন্যান্য সামগ্রী বিলি করা হয়েছে। কিন্তু এখনও খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে কয়েকটি পরিবার। মাঝে-মধ্যেই বৃষ্টি নামছে। মাস কয়েকের জন্য অস্থায়ী শিবির চেয়েছেন তাঁরা। মহকুমাশাসক বলেন, “আমি ইসিএল কর্তৃপক্ষকে তাঁদের কমিউনিটি সেন্টারগুলি দিতে বলেছি। ওগুলি পেলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সেখানে পাঠিয়ে দেব।” ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার জিএম গোরাচাঁদ বাউরি জানিয়েছেন, হেনার পরিবারের জন্য তাঁরা ইতিমধ্যেই একটি খালি আবাসন দিয়েছেন। কয়েকটি কমিউনিটি সেন্টার দেওয়ার ব্যবস্থাও হচ্ছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.