রঘুরাম রাজন-কমিটির রিপোর্টকে কেন্দ্র করে এ বার দিল্লির বিরুদ্ধে বড়সড় আন্দোলনে নামতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে দিল্লি গিয়ে ধরনায় বসতেও পিছপা হবেন না বলে ঘনিষ্ঠ জানিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে দিল্লি নোংরা খেলায় নেমেছে। রাজনৈতিক রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রীয় অনুদান নিয়েও পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি, কেন্দ্র যেন রাজ্যকে দুর্বল মনে না করে। দিল্লি গিয়ে ধরনা-আন্দোলনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী দলীয় সাংসদদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
রাজ্য সরকারের দাবি, এ বছর ঋণের সুদ-আসল মিলিয়ে কেন্দ্রকে ২৮ হাজার কোটি টাকা শোধ করতে হবে। ২০১২-১৩ সালে এই খাতে মেটাতে হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। তার আগের এই অঙ্ক ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এক দিকে যখন রাজ্যের কোষাগার থেকে সুদ-আসল বাবদ মোটা টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে, তখন রাজন-রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় বরাদ্দও কমানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে দিল্লি। এই জোড়া ধাক্কা সামাল দেওয়া রাজ্যের পক্ষে কঠিন হবে বলেই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর।
রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অনুদান বাবদ বছরে ১৮-২০ হাজার কোটি টাকা পেয়ে থাকে। প্রকল্প ভিত্তিক খরচের উপরও অনুদান পাওয়া নির্ভর করে। অর্থাৎ টাকা সময়ে খরচ করতে পারলে অনুদান বেশি আসে, খরচ করতে না পারলে কমে যায় অনুদানের পরিমাণ। রঘুরাম রাজন কমিটির রিপোর্টের প্রস্তাব অনুযায়ী, কেন্দ্রের মোট বার্ষিক অনুদানের মাত্র ৫.৫০% পাবে পশ্চিমবঙ্গ। এত দিন পাওয়া যেত মোট অনুদানের ৬.৯৩%। মূলত জনসংখ্যা এবং গরিব মানুষের সংখ্যার ভিত্তিতেই এত দিন কেন্দ্রীয় অনুদানের পরিমাণ ঠিক করা হোত। ‘মাল্টি ডাইমেনশনাল ইনডেক্স’ (এমডিআই) নামে এক নতুন সূচকের মাধ্যমে অনুদানের পরিমাণ স্থির করেছে রাজন কমিটি। আর তাতেই কমতে চলেছে রাজ্যের অনুদান প্রাপ্তির পরিমাণ।
|