করিম বেঞ্চারিফা তাঁর জন্য হাহুতাশ করছেন। আর তিনিওকোলি ওডাফা, টিমের অসংখ্য গোল নষ্টের দৃশ্য টিভিতে দেখে হাত কামড়াচ্ছেন বাড়িতে বসে।
শনিবার গোয়া এবং কলকাতা মিলে গেল এ ভাবেই। মোহনবাগানের ফের আই লিগে পয়েন্ট নষ্টের দিনে।
মাঠের বাইরে ‘কোচেস জোন’-এ দাঁড়িয়ে আফসোস করছিলেন করিম বেঞ্চারিফাও। ম্যাচের পর মোহন কোচকে ফোনে ধরা হলে হতাশ গলায় বললেন, “ওডাফা থাকলে আজকের ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতামই।”
করিমের মতোই গোলের সহজ সুযোগগুলো নষ্ট করে তিন পয়েন্ট হাতছাড়া করা মানতে পারছেন না চোট নিয়ে বাড়িতে বসে থাকা বাগান অধিনায়কও। বললেন, “খুব খারাপ লাগছে। আজ গোলের সুযোগগুলো নষ্ট না হলে আমরাই জিততাম। আশা করছি, আই লিগের পরের ম্যাচ থেকেই খেলতে পারব। এ ধরনের সুযোগ যেন আর নষ্ট না হয়, আমাদের সবাইকে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।” |
করিম, ওডাফার প্রাক্তন ক্লাব চার্চিলের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন কাতসুমিরা। এরিককে সামনে রেখে মূলত ৪-৩-২-১ স্ট্র্যাটেজিতে দল সাজিয়েছিলেন করিম। মাঝ-মাঠ গুছিয়ে আক্রমণে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশমতো এরিক-জাকিররা বিপক্ষ রক্ষণ ভেঙে গোলের মুখও খুললেন। এক বার নয়, বেশ কয়েক বার। কিন্তু কাজের কাজটাই করে উঠতে পারলেন না। ৯০ মিনিট লড়াই করেও গোল পেল না মোহনবাগান। এরিক এ দিনও হতাশ করলেন। এরিক প্রসঙ্গে করিমের ব্যাখ্যা, “সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে ওকে খেলাতে চাই। ওটাই ওর আসল জায়গা। কিন্তু ওডাফার জায়গায় ওকে খেলাতে বাধ্য হচ্ছি। আর এই চাপটা নিতে পারছে না।”
বিরতির পর লেনি, হেনরিরাই পালটা চাপ বাড়াতে থাকে মোহনবাগানের ওপর। সন্দীপ নন্দী যদি বেশ কয়েকটা ভাল সেভ না করতেন, তবে সমস্যায় পড়ে যেত করিমের দল। একেই দুলের স্টেডিয়ামের ভরা গ্যালারি চিৎকার করছিল গত বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চার্চিলের সমর্থনে। তার ওপর চার্চিলের বার বার আক্রমণে একটা সময়ে রীতিমতো কাঁপুনি ধরে গেছিল মোহন রক্ষণে। কিন্তু সে সময় করিমের দু’টি পরিবর্তনে আবার খেলার রাশ চলে আসে মোহনবাগানের হাতেই। রাম মালির জায়গায় সাবিথ ও আদিল খানের পরিবর্তে শঙ্করকে নামিয়ে ৪-৩-৩ স্ট্র্যাটেজিতে চলে যান করিম। কাউন্টার অ্যাটাকে যেতে শুরু করে মোহনবাগানও। কিন্তু এতেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি মোহনবাগান। উল্টে সাবিথ যে ভাবে একটি নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেছেন, তা দেখার পর সন্দীপও বললেন, “আজ ওডাফাকে মিস করেছি আমরা। ওর না থাকাটা কত বড় সমস্যা, সেটা বোঝা গেছে।”
করিমের হিসেব অনুযায়ী অবশ্য প্রথম দু’টি অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে দু’পয়েন্ট ভাল ফল। “আমার হিসেব মতো, বেঙ্গালুরু এবং চার্চিলের থেকে দু’পয়েন্ট পাওয়া যথেষ্ট ভাল। টিমও অনেক উন্নতি করেছে। তবে গোল না পাওয়ার সমস্যা রয়েছে। ওডাফা-ভার্গবরা চোট সারিয়ে দলে ঢুকলে সেটার সমাধানও হয়ে যাবে,” বললেন মরোক্কান কোচ।
মোহনবাগান: সন্দীপ, ওয়াহিদ, ইচে, কিংশুক, আইবর, আদিল (শঙ্কর), ডেনসন, জাকির, কাতসুমি, রাম (সাবিথ), এরিক। |