মুম্বইয়ে বাড়ি ভেঙে মৃত্যু বেড়ে ৫০ |
সংবাদ সংস্থা • মুম্বই |
সারি সারি নিষ্প্রাণ দেহ ঘুম কেড়েছে উদ্ধারকর্মীদের। মাজগাঁওয়ের কর্মী আবাসন ভেঙে পড়ার ঘটনা ফিরিয়ে দিয়েছে ঠাণের স্মৃতি।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০। মৃত্যু হয়েছে মারাঠি দৈনিক সংবাদপত্রের এক সাংবাদিকেরও। জখমের সংখ্যা তিরিশ ছাড়িয়েছে। উদ্ধারকাজ চালানোর সময় আহত হয়েছেন দমকল বাহিনীর এক অফিসারও। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আশঙ্কা, বৃহন্মুম্বই পুরসভার ওই কর্মী আবাসনটির ধ্বসংসস্তূপের নীচে এখনও আটকে রয়েছেন কম পক্ষে ৩৬ জন।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ। রাজ্য সরকারি তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারপিছু এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও মৃতদের পরিবারপিছু আরও দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুম্বইয়ের মেয়র সুনীল প্রভু। আহতদের চিকিৎসার সমস্ত ভার নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আশ্রয়হীনদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে তাদের তরফে।
শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হঠাৎই ভেঙে পড়ে মাজগাঁওয়ের বাবু গেনু মার্কেট সংলগ্ন পুরসভার কর্মী আবাসনটি। বহুতল ওই আবাসনে ২১টি পরিবারের বাস ছিল। |
|
ধ্বংসস্তূপে প্রাণের খোঁজে দমকলকর্মীরা। শনিবার মুম্বইয়ে। ছবি: এএফপি। |
৩৩ বছরের পুরনো আবাসনটিকে সম্প্রতি বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছিল পুরসভা। বাড়িটি পরিদর্শনও করে যায় পুরসভার এক তদন্ত কমিটি। কমিটির তরফে বাড়িটি দ্রুত সারাইয়ের সুপারিশ করা হলেও পুরসভার তরফে আদতে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি বলে অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িটি ভেঙে পড়ায় শুক্রবারই প্রাণ হারিয়েছিলেন এক পরিবারের তিন জন-সহ মোট তেরো জন। এ দিন আরও ৩৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হল ধ্বংসস্তূপ থেকে। তবে মৃতদের সকলের পরিচয় জানা যায়নি এখনও। আহতদের স্থানীয় জেজে ও নাইয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিপজ্জনক ওই কর্মী আবাসনটির নীচের তলায় পুরসভার অনুমতি ছাড়াই অফিস পুনর্নির্মাণের কাজ চালানোর অভিযোগে এক সংস্থার মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম অশোক মেটা। বছর খানেক আগে বৃহন্মুম্বই পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই বাড়িটির নীচের তলার একটি অংশ ভাড়া নিয়েছিলেন অশোক। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে অফিস পুনর্নির্মাণের নামে বাড়িটির নীচের তলায় অহেতুক ভাঙচুড়ের ফলেই নড়বড়ে হয়ে যায় ভিত। যার পরিণাম শুক্রবারের দুর্ঘটনা।
চলতি বছর এপ্রিল মাসে ঠাণের মুম্বরা এলাকায় নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ৭৪ জনের। প্রশাসনের নাকের ডগায় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল। কাঠগড়ায় ছিলেন এলাকার পুরপিতা। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে বারবার বসতবাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে মুম্বই প্রশাসন। |
পুরনো খবর: মুম্বইয়ে বাড়ি ভেঙে মৃত ১৩ |
|