তিস্তা চুক্তি নিয়ে জটিলতা কাটাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও এক বার বোঝানোর চেষ্টা হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ তাঁর জন্মদিনে এই আশ্বাসই দিলেন মনমোহন সিংহ। বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদকেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যদি পুরো বিষয়টা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীকে শেষ বারের মতো বোঝানোর চেষ্টা হয়।
নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে আজ রাষ্ট্রপুঞ্জেরই দফতরে বৈঠকে বসেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীরা। ঘটনাচক্রে আজই ছিল হাসিনার জন্মদিন। হাসিনার সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেয়েও। সলমন খুরশিদও নিউ ইয়র্কে এসে গিয়েছেন। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণিও এখন নিউ ইয়র্কে। তাঁদের দু’জনের মধ্যেও কথা হয়েছে। সলমন খুরশিদ বলেছেন, “মমতার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি কলকাতায় যেতে প্রস্তুত। মমতা যদি রাজি থাকেন, তা হলে বিষয়টা আবার তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করব।”
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। বাংলাদেশে ভোট তারও আগে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ মমতাকে বোঝানোর চেষ্টার কথা বললেও, লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি যে মমতাকে রুষ্ট করতে চাইবেন না, তা স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, আনুষ্ঠানিক চুক্তি না হলেও তিস্তার জল বণ্টন যে ভাবে হওয়া উচিত, সেই ভাবেই কিন্তু হচ্ছে। গজলডোবা ও ডালিয়া, এই দু’জায়গাতেই চুক্তির পরিমাণ অনুযায়ীই জল ছাড়ছে ভারত। চুক্তি না হলেও অনেক ক্ষেত্রে জল বেশিই পেয়েছে বাংলাদেশ। চুক্তিতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর জল বণ্টনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। কাজেই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে তিস্তা চুক্তি করা না গেলেও জল ভাগাভাগি নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব ভারত দেখায়নি।
হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিস্তা চুক্তি বিষয়ে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত অনুমোদন করিয়েই চুক্তিতে সই করে দিতে পারে নয়াদিল্লি। কিন্তু রাজ্য সরকারকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করতে চাইছেন না তিনি। মমতার কথা না শুনে তিনি তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাইছেন না। তাই মমতাকে বোঝানোর আরও এক বার চেষ্টা করবে দিল্লি।
পাশাপাশি মনমোহন জানিয়েছেন সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনে স্থল-সীমান্ত চুক্তি নিয়ে বিলটি আবার উত্থাপন করা হবে। এটি পাশ করাতে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। কাজেই বিজেপিকে পাশে পাওয়াটা জরুরি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই বিলটি আর এক বার পাশ করানোর চেষ্টা হবে। |