|
|
|
|
খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে সব রাজ্যের মত জানতে বৈঠক ডাকল কেন্দ্র |
কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী • কলকাতা |
খাদ্য সুরক্ষা আইনে কারা সুবিধা পাবেন, কারাই বা রেশন ব্যবস্থার সুযোগ হারাবেন তার মাপকাঠি ঠিক করতে কাল, সোমবার থেকে দু’দিনের বৈঠক বসছে দিল্লিতে। দেশের সব ক’টি রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী ও খাদ্যসচিবরা ওই বৈঠকে আমন্ত্রিত। প্রশাসন সূত্রের খবর, শুধু সুবিধাভোগী বাছাই করা নয়, নতুন আইন বাস্তবায়িত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে কী ভাবে কাজে লাগানো হবে তারও রূপরেখাও তৈরি হবে এই বৈঠকে। আইন প্রয়োগের আগে রাজ্যগুলির মতামত নিতেই কেন্দ্র এই বৈঠক ডেকেছে।
খাদ্য সুরক্ষা আইনের সুবিধা পাবেন গ্রাম ও শহর মিলিয়ে ৬৭% মানুষ। কিন্তু রেশন কার্ড থাকলেও গ্রামের ২৫% এবং শহরের ৫০% মানুষ গণবণ্টন ব্যবস্থার সুযোগ পাবেন না। এই বিষয়টি নিয়েই খাদ্য সুরক্ষা বিল-এর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দেশের শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ারপ্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন’। সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, “বাকিদের ভরসা কি খোলা বাজারের বর্ধিত মূল্যের চাল-গম? কোন যুক্তিতে তাঁদের গণবণ্টন ব্যবস্থার বাইরে রাখা হচ্ছে?” রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমরা চাই প্রত্যেক নাগরিকের খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত হোক। দিল্লির বৈঠকেও রাজ্যের এই মতামত জানিয়ে দেওয়া হবে।” সূত্রের খবর, বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য দিল্লিকে জানিয়ে দেবে, রেশন কার্ড যাঁদের আছে তাঁদের বাদ দেওয়ার দায়িত্ব তারা নেবে না। তবে এই নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। দিল্লির বৈঠকে তিনি নিজে যাচ্ছেন না। যাবেন রাজ্যের খাদ্যসচিব অনিল বর্মা।
ত্রিপুরা সরকার অবশ্য কেন্দ্রকে বলেছে, সে রাজ্যের ১০০ শতাংশ মানুষ যাতে রেশন পান, সেই বন্দোবস্ত করতে হবে। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক বলছে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে গ্রাম ও শহরের বহু রেশন কার্ডের মালিক রেশন তোলেনই না। শহর এলাকায় এই সংখ্যাটা বেশি। তাই বর্তমান রেশন কার্ড মালিকদের একটি অংশ বাদ পড়লেও বৈষম্যের পরিবেশ তৈরি হবে না। তবে খাদ্য সুরক্ষা আইনে সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করার কাজটা যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গেই করতে চায় দিল্লি।
বৈঠকে গণবণ্টন ব্যবস্থাকে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত করার বিষয়েও আলোচনা হবে। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের এক খাদ্যকর্তা বলেন, “এতে আমাদের রাজ্যে সমস্যা তৈরি হতে পারে। কারণ, এখানে প্রায় এক কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে। রেশন কার্ড কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত করা হলে সেখানে গ্রাহকের ছবি থাকবে। তখন স্বাভাবিক নিয়মেই ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হয়ে যাবে। এটা এক দিকে ইতিবাচক। কিন্তু গ্রাহক কমলে কেন্দ্রের মাসিক রেশন বরাদ্দও কমে যাবে।” তবে যাঁরা খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকবেন, তাঁদের জন্য নতুন রেশন কার্ডের বিষয়টি নিয়েও কথা হতে পারে দিল্লির বৈঠকে।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “ভুয়ো রেশন কার্ড ধরার অভিযান এখনও চলছে। নতুন করে ডিজিটাল রেশন কার্ড করা গেলে দ্রুত ভুয়ো রেশন কার্ড নির্মূল করা যাবে।
ইতিমধ্যেই কিছু এলাকায় বারকোড যুক্ত রেশন কার্ড তৈরির কাজ হয়েছে। এ বার দিল্লির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করবে খাদ্য দফতর।” বস্তুত, ভুয়ো রেশন কার্ড ও রেশন সামগ্রীর কালো-বাজারি নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, এই সমস্যা বহু রাজ্যেই রয়েছে। তবে ভুয়ো রেশন কার্ড যত বাতিল করা যাবে, ততই ভর্তুকির বোঝা কমবে। |
পুরনো খবর: সংসদে বিল স্থগিত, তবু ৩ রাজ্যে চালু খাদ্য সুরক্ষা |
|
|
|
|
|