জেলের আশঙ্কায় লালুর মুখে কৃষ্ণ-কথার স্তোক
যাদব-কুলপতি কৃষ্ণের জন্মই তো কারাগারেএকদা এই স্তোক তিনি দিয়েছিলেন রামভক্ত লালকৃষ্ণ আডবাণীকে। এ বারও সেই আপ্তবাক্যটিই লালু প্রসাদ শোনাচ্ছেন তাঁর দল ও তাঁর তথাকথিত ভোটব্যাঙ্ক বিহারের যাদবকুলকে।
সে বার আডবাণীর রামরথ যাত্রা ঠেকাতে বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ আডবাণীর বাড়িতে গিয়ে বলে এসেছিলেন, রথ নিয়ে বিহারে ঢুকলে কী হবে জানি না। তবে চিন্তা নেই, কৃষ্ণ ভগবানের জন্ম কারাগারেই হয়েছিল। বিহারের সমস্তিপুরে রথ রুখেছিলেন লালু। বিহার পুলিশ গ্রেফতার করে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে।
এ বার পশুখাদ্য মামলায় আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব যখন প্রায় জেলের পথে—সেই সময় দলীয় নেতাদের তিনি বাসুদেবের জন্মবৃত্তান্তই শুনিয়েছেন। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে চাইবাসা ট্রেজারি কেলেঙ্কারি মামলায় সিবিআই রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ ও জগন্নাথ মিশ্র-সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে আদালতে। সোমবার রাঁচির সিবিআই আদালত সেই মামলার রায় শোনাবেন। সোমবার রাঁচিতে হাজির থাকবেন লালু প্রসাদ। আপাতত প্রশ্ন, লালু কী ফের জেলের পথে? এই প্রশ্নেই আলোড়িত বিহার রাজনীতি। প্রশ্ন, দুর্নীতির দায়ে দলনেতা জেলে গেলে দলের হাল কী হবে? লোকসভা ভোটের আর এক বছরও বাকি নেই। ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা কী বিহারের এক নম্বর যাদব পরিবারের পক্ষ সম্ভব?
দোষী সাব্যস্ত সাংসদ-বিধায়কদের স্বস্তি দিতে আনা কেন্দ্রের প্রস্তাবিত অর্ডিন্যান্সটি কাল রাহুল গাঁধী খারিজ করে দেওয়ার পরেই অস্বস্তি বেড়েছে লালু-রাবড়ীর পরিবার, আরজেডিতে। কারণ সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রথম বলিই হবেন লালু প্রসাদ।
দলের সাংসদ ও লালু ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিত রামকৃপাল যাদবদের দাবি তাঁরা এই নিয়ে এত কিছু ভাবছেন না। তাঁর কথায়, “লালু প্রসাদ এর আগেও জেলে গিয়েছেন। তাতে দলের কোনও ক্ষতি হয়নি। নেতা যদি জেলেও যান, এক বা দু’মাসের জন্য যাবেন। জামিনে ছাড়া পেয়ে তিনি ফের ফিরে আসবেন।” ১৯৯৭ সালের ২০ জুলাই লালু প্রসাদকে গ্রেফতার করে সিবিআই। জেলে যান মুখ্যমন্ত্রী লালু, তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন পত্নী রাবড়ী দেবী। পরে জামিন পান লালু। রামকৃপালদের বক্তব্য, তাতে দলের বা দলনেতার কোনও ক্ষতি হয়নি। বরং আরও বেশি ভোটে জিতে সরকারে আসে আরজেডি।
বিজেপির অবশ্য মত এতে লালুর ভবিষ্যৎ কিছুটা হলেও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। সেটা ভেবে লালু প্রসাদ যথেষ্ট ‘ব্যাক ফুটে।’ বিজেপি নেতা সিপি ঠাকুরের কথায়, “লালু জেলে যাবে। আরজেডি লালু ভিত্তিক দল। লালুর জেল হবে এটা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই তাঁর ছেলেকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছেন তিনি।” জাতপাতের রাজনীতির ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, “যাদব গোষ্ঠীর ভোটাররা এর পর লালুর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।” রাজনীতি যে এত সরল নয় তা সম্যক বুঝেছেন জেডিইউ নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি বলেন, “আগেও তো লালু প্রসাদ জেলে গিয়েছিলেন। তাতে কী হয়েছে।” আর রামকৃপালের বক্তব্য, “বিজেপি দিবা স্বপ্ন দেখছে। লালু প্রসাদ জেলে গেলে যদি রাজনীতি শেষ হয়ে যেতো তা হলে আগেই তো তা হতে পারত। এ সব নিয়ে আমরা ভাবছি না। আদালতের উপর আমাদের বিশ্বাস আছে। ন্যায় বিচার হবে বলেই আমরা আশাবাদী।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.