সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস নিয়ে খসড়া প্রস্তাব আজ অনুমোদন করল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের সদস্য ১৫টি দেশই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান-কি মুনের মতে, “অনেক দিন পরে সিরিয়া সম্পর্কে ভাল খবর শোনা গেল।” সিরিয়া নিয়ে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ভারতও।
সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাসার-অল-আসাদ ও তাঁর বিরোধীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলছে। সম্প্রতি আসাদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় সামরিক অভিযানের কথা ভাবতে শুরু করে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া। কিন্তু, দৃঢ় ভাবে আসাদের পাশে দাঁড়ান তাঁর পুরনো মিত্র রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আমেরিকাকে চাপ দিতে যুদ্ধজাহাজও পাঠিয়েছিল রাশিয়া।
শেষ পর্যন্ত পিছু হটেন ওবামা। জেনিভায় সিরিয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বসেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি। পরে দু’পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি হয়। তাতেই আজ সায় দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ।
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের কাজ করবে ‘অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপনস’। দ্রুত এই কাজের জন্য একটি কার্যপদ্ধতি তৈরি করতে বলা হয়েছে। সিরিয়ায় কোনও পক্ষই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার, তৈরি, মজুত বা সরবরাহ করতে পারবে না। নির্দেশ অমান্য করে কেউ এই কাজ করলে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ মেনে নিষেধাজ্ঞা জারি বা আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সেই ব্যবস্থা নিতে নিরাপত্তা পরিষদে ফের একটি প্রস্তাব আনতে হবে। ভেটো দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করে,বাতিল করে দিতে পারে রাশিয়া।
রাশিয়ার দাবি মেনে অনেকটাই পিছু হটলেও প্রকাশ্যে তা মানতে রাজি নয় আমেরিকা। বিদেশসচিব জন কেরির কথায়, “এই কড়া প্রস্তাব নজির হয়ে থাকবে। যে কোনও দেশেই রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ যে সভ্য মানুষের চিন্তারও অতীত তা এই প্রথম স্পষ্ট ভাষায় বলল গোটা দুনিয়া।” রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, “আসাদ বা বিরোধী- যে কোনও পক্ষ রাষ্ট্রপুঞ্জের নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আজ রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতায় আমেরিকা-রাশিয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর মতে, সিরিয়ার লড়াই গোটা পশ্চিম এশিয়ার স্থিতি নষ্ট করতে পারে। ভারত সব রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করার পক্ষে। নভেম্বর মাসে সিরিয়া নিয়ে জেনিভায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ডাকতে চান বান-কি মুন। মনমোহনের মতে, যত দ্রুত সম্ভব এই সম্মেলন ডাকা উচিত। কারণ, সামরিক শক্তি দিয়ে সিরিয়ার সমস্যার সমাধান করা যাবে না। |