|
|
|
|
তিন দশক পরে ফের শীর্ষ স্তরে ইরান-আমেরিকা কথা |
সংবাদ সংস্থা • নিউ ইয়র্ক ও তেহরান |
তিন দশকেরও পরে প্রথম ইরানের কোনও শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আজ ফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোওহানির সঙ্গে কথা বলেন বারাক ওবামা। নিউ ইয়র্কে সেই ফোনালাপে সৌজন্যের অভাব ছিল না। কিন্তু, দেশে ফেরার পরে কট্টর মার্কিন-বিরোধীদের মিছিল থেকে রোওহানিকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়লেন এক ব্যক্তি।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরে মার্কিন দূতাবাস দখল করে বিপ্লবীরা। তার আগেই দেশ ছেড়ে পালান দেশের প্রাক্তন শাসক মহম্মদ রেজা শাহ পাহলভি। তার আগে তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। এর পরে একেবারেই শীতল হয়ে যায় ইরান-আমেরিকার সম্পর্ক।
তেহরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ওয়াশিংটনের। বেশ কয়েক বার ইরানের উপরে কড়া নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে। কিন্তু, কিছু দিন ধরে ইরানের সঙ্গে সমস্যা মেটানোর কূটনৈতিক পথও খুঁজছিলেন ওবামা। কূটনীতিকদের মতে, ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্ক বদলে গেলে তা গোটা পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে।
ইরানের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক অনেক সময়েই ভাল চোখে দেখেনি আমেরিকা। ইরান থেকে তেল কেনা কমাতে নয়াদিল্লিকে চাপও দিয়েছিল তারা। কিন্তু, ওবামা ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক বদলাতে উদ্যোগী হওয়ার পরে এই বিষয়ে নয়াদিল্লির মতকেও গুরুত্ব দিচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। গত কাল ওবামার সঙ্গে বৈঠকে ইরান-মার্কিন সুসম্পর্ক তৈরির উদ্যোগের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতাতেও সে কথা বলেছেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তার পরেই আজ রোওহানিকে ফোন করেন ওবামা। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে যোগ দেওয়ার শেষে তখন দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরের দিকে রওনা দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। কূটনৈতিক সূত্রে খবর, প্রথমে রোওহানির সঙ্গে ওবামার সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাবই দিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু, ইরানই ফোনে কথা বলার পাল্টা প্রস্তাব দেয়। কূটনীতিকদের ধারণা, এখনই ওবামার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে চাননি রোওহানি। সে ক্ষেত্রে দেশে কট্টরপন্থীদের প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়ার আশঙ্কা ছিল তাঁর।
মূলত ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়েই আলোচনা হয় ওবামা ও রোওহানির। হালকা মুহূর্তে নিউ ইয়র্কের যানজট নিয়ে রোওহানির কাছে ‘ক্ষমাও’ চান ওবামা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছনোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে বিদেশসচিব জন কেরিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। টুইটারে রোওহানির নামে তৈরি এক অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে, “সদিচ্ছা থাকলে পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
ওবামার সঙ্গে ছবি না তুললেও কট্টরপন্থীদের রোষ এড়াতে পারেননি রোওহানি। তেহরানে কট্টরপন্থীরা আমেরিকা ও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে জুতোও ছোড়েন এক জন। তবে বিক্ষোভকারীদের চেয়েও রোওহানির সমর্থকরা সংখ্যায় অনেক বেশি ছিলেন। প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|