|
|
|
|
নেতৃত্বে বদল নেই, ফব ছেঁটেই ফেলল প্রাক্তন মন্ত্রী সরল দেবকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শেষ পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বর্ষীয়ান প্রাক্তন মন্ত্রী সরল দেবকে ছেঁটে ফেলল ফরওয়ার্ড ব্লক। চেন্নাইয়ে দলের ১৭তম পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনে নতুন যে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়েছে, তাতে সরলবাবুর জায়গায় নতুন এসেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলারই সম্পাদক হরিপদ বিশ্বাস। ওই জেলায় সরলবাবুর অনুগামীদের সঙ্গে হরিপদবাবুদের দ্বন্দ্ব এক সময় তুমুল আকার নিয়েছিল। যার জেরে ফব-র সদস্যপদ নবীকরণ করাতেও বেঁকে বসেছিলেন সরলবাবু। তাঁকে সরিয়ে হরিপদবাবুকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এনে ফব সরল-অধ্যায়ে ইতি টানলেন বলেই দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা।
প্রত্যাশিত ভাবেই, ফব-র সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ফের নির্বাচিত হয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। প্রবীণ নেতা ভেলাপ্পন নায়ারও রয়ে গিয়েছেন চেয়ারম্যান পদে। মহারাষ্ট্রে সদ্য দলে-ফেরা, বিদর্ভের নেতা জাম্বোবন্তরাও ধোটেকে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীতে এনে এ বার ডেপুটি চেয়ারম্যান করা হয়েছে। চেন্নাইয়ে তাক লাগিয়ে দেওয়া পার্টি কংগ্রেসের নেপথ্য কারিগর, ফব-র তামিলনাড়ু রাজ্য সম্পাদক পি ভি কাথিরাবণও ডেপুটি চেয়ারম্যানের পুরস্কার পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর একাংশ অবশ্য এ বার তরুণ নেতা জি দেবরাজনকে সাধারণ সম্পাদক দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের ইচ্ছাপূরণ হয়নি। শীর্ষ নেতৃত্বের মতো কেন্দ্রীয় কমিটিতেও বিশেষ রদবদল হয়নি। কয়েকটি রাজ্য থেকে শূন্যস্থান ভরেছে মাত্র। পশ্চিমবঙ্গ থেকে হরিপদবাবু ছাড়াও কমিটিতে এসেছেন দক্ষিণী নেতা বালকৃষ্ণন।
নতুন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পরে প্রতিনিধিদের একাংশ সম্মেলন কক্ষেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলে একটি সূত্রের খবর। দলের অন্দরের পরিস্থিতি আঁচ করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভেবে রেখেছেন, দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সম্পাদক পদের মেয়াদ তিন বারে বেঁধে দেওয়া হতে পারে। তবে এ দিন সে নিয়ে কিছু ঘোষণা হয়নি।
পার্টি কংগ্রেসের বিতর্কে কোচবিহারের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ আশঙ্কা করেছিলেন, অচিরেই দিল্লিতে মাথা গোঁজার জায়গা হারাতে পারে ফব! দলের একমাত্র রাজ্যসভার সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হয়ে যাবে। ওই সময়েই লোকসভা নির্বাচনে বারাসত, কোচবিহার বা পুরুলিয়া, কোনও জায়গা থেকেই দল জিততে পারবে কি না, সংশয় আছে। সাংসদ না-থাকলে দিল্লির বাংলো হাতছাড়া হবে, থাকবে না সেখানকার দলীয় কার্যালয়ও। বৃহস্পতিবার পার্টি কংগ্রেস প্রতিনিধিদের (মোট হাজিরা ৮৪৬ জনের) বার্তা দিতে গিয়ে দলের প্রবীণতম নেতা অশোক ঘোষ ঘোষণা করেন, দিল্লিতে নতুন দলীয় দফতর ‘নেতাজি ভবন’ গড়ে তোলার কাজ শুরু হবে। ৬ মাসের মধ্যে এক কোটি টাকা তুলতে হবে কর্মীদের। পার্টি কংগ্রেস থেকেই ওই তহবিলের জন্য বিভিন্ন রাজ্য কমিটি থেকে জমা পড়েছে দু’লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা। তার মধ্যে স্বয়ং অশোকবাবুই দিয়েছেন এক লক্ষ টাকা।
জবাবি ভাষণে এ দিন দেবব্রতবাবু বলেছেন, আঞ্চলিক দলগুলির খামখেয়ালি রাজনীতির উপরে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে বৃহত্তর বাম ঐক্য গড়ে তোলাই প্রাথমিক কাজ হওয়া উচিত। পাশাপাশিই তাঁর বার্তা, ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে পশ্চিমবঙ্গে দল একেবারে অন্য রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি। আক্রমণের মুখেও কর্মীদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে, পরিস্থিতি পাল্টাতে আন্দোলনের পথেই যেতে হবে।
|
|
|
|
|
|