|
|
|
|
বিশেষ মর্যাদায় খুশি নীতীশ, জয়ের ভাগ চেয়ে সরব লালুরাও |
স্বপন সরকার • পটনা |
নীতীশের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। দ্বিতীয় সব থেকে পিছিয়ে পড়া রাজ্যের ‘মর্যাদা’ পেল বিহার। এর ফলে আরও কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে বিহারের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য রকমের বৃদ্ধি পাবে বলে আশা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিহার রাজ্য-রাজনীতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে নয়া টানাপোড়েন। নীতীশ এটিকে নিজের রাজনৈতিক জয় হিসেবে দেখছেন। কিন্তু নীতীশের দুই প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং লালু প্রসাদের আরজেডি-র দাবি, এ জয় আসলে তাদের। যা দেখে নীতীশের সহাস্য কটাক্ষ, “দুই তরফেই এই দাবি নিয়ে অনেক ঠাট্টা করা হয়েছিল। আজ বিহারের উন্নয়নের দরজা খুলে গেল। এটা আসলে বিহারের মানুষের জয়।”
তাঁর দীর্ঘদিনের দাবিটি কংগ্রেস সরকার মেনে নেওয়ায় দৃশ্যতই আপ্লুত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সকালে গয়ার কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে থাকাকালীন তিনি কেন্দ্রীয় ঘোষণার খবর পান। সেখান থেকেই সোজা চলে আসেন দলের সদর দফতরে, তড়িঘড়ি ডাকা সাংবাদিক বৈঠকে। বলেন, “এই সিদ্ধান্তের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে ফোনে আমি ধন্যবাদ জানিয়েছি।” যে বিহারকে এই মর্যাদা দেবে, তিনি তার সঙ্গেই থাকবেন এই ঘোষণা প্রকাশ্যেই করেছিলেন নীতীশ। তবে কি আগামী দিনে ইউপিএ-র অন্যতম শরিক হতে চলেছে এনডিএ ভেঙে বেরিয়ে আসা নীতীশের জেডিইউ? নীতীশ শুধু বলেন, “আজ রাজনৈতিক আলোচনায় যাব না। ২৮-২৯ অক্টোবর রাজগীরে চিন্তন শিবিরের পরে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।”
কেন্দ্রের ঘোষমার পরে আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদের বলেন, “নীতীশের দাবি ছিল, বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা। তা তো পাওয়া যায়নি!” কিন্তু নীতীশের পাল্টা দাবি, “কেন্দ্র বিহারকে ‘বিশেষ রাজ্যে’র বদলে ‘সব থেকে পিছিয়ে পড়া রাজ্যে’র মযার্দা দিয়েছে। তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই, কারণ এর মধ্যেই বিশেষ সুবিধার কথা বলা হয়েছে। সুতরাং এটা আমাদের কাছে জয়।” মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, “রাজ্যের জন্য বিশেষ সুবিধা পাব। অতিরিক্ত বরাদ্দ মিলবে। তাতে উন্নয়নের দরজা খুলে যাবে।” |
|
নীতীশ কুমারের সাংবাদিক সম্মেলন। বৃহস্পতিবার পটনায় নগেন্দ্রকুমার সিংহের তোলা ছবি। |
২০০৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি তোলেন নীতীশ। ২০০৬ সালে বিধানসভা ও বিধান পরিষদে এ বিষয়ে সর্বদলীয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। তাঁর দাবির ভিত্তিতেই চিদম্বরম এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাঁর তৎকালীন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রঘুরাম রাজনের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করেন। দু’মাসের মধ্যেই কমিটি তাদের রিপোর্ট দিয়েছে। নীতীশ কুমার বলেন, “আমাদের দাবি ছিল, পিছিয়ে পড়া রাজ্যের মর্যাদা পেতে যে ধরনের মাপকাঠি আছে, তার পরিবর্তন করা হোক। সেটা কেন্দ্র করেছে। তার ভিত্তিতে বিহার সব থেকে পিছিয়ে পড়া রাজ্যের মর্যাদা পেয়েছে।” তিনি বলেন, “বিহারের আন্দোলনের ফলে আরও ৯টি রাজ্য এই সুবিধা পেয়েছে। আমরাই তো বলেছিলাম, উন্নয়নের অধিকার সকলের আছে। ”
আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে খানিকটা বিভ্রান্ত রাজ্যের দুই বিরোধী দল। পরিস্থিতি সামাল দিতে দু’পক্ষই এখন বলছে, তারাই এই দাবির প্রবক্তা। বিজেপির গিরিরাজ সিংহ বলেন, “আমরাই ২০০৬ সালে এই প্রস্তাব রেখেছিলাম। কংগ্রেস এবং নীতীশ কুমার এক জোট হয়ে বিহারের মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে।” আর লালু প্রসাদের দাবি, “রাবড়ী দেবী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই এই প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। জয় তো আমাদের!” |
|
|
|
|
|