বুঝিনি, ওরা সেনার পোশাক পরা জঙ্গি
ব্জি বোঝাই টেম্পো থেকে সেনার পোশাক পরা তিন জনকে নামতে দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন, ওরা রাষ্ট্রীয় রাইফেলস শিবিরের সেনা। কিন্তু ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগেনি হিরা নগর থানার অয়্যারলেস অপারেটর আশুতোষ শর্মার। কিছু ক্ষণ কথা বলার পরেই বন্দুক থেকে ছিটকে আসা এলোপাথাড়ি গুলি আর জেহাদি স্লোগান শুনে তত ক্ষণে বুঝতে পেরে গিয়েছেন, ভয়াবহ জঙ্গি হানার সাক্ষী হতে চলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে সাতটা। রাতঘুমের আলস্য ভেঙে শুরু হচ্ছিল কঠুয়া জেলার হিরা নগর থানার কাজকর্ম। হঠাৎই সেনার পোশাক পরা ২০-২৫ বছরের তিন জন যুবক থানায় এসে প্রধান কনস্টেবলের কাছে পুলিশ প্রশিক্ষণ শিবিরের খোঁজ করে। ওই শিবিরগুলিতেই জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ’ (এসওজি)-র কর্মীদের জঙ্গি মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আশুতোষ শর্মা টেলিফোনে বললেন, “ওরা পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ করলে আমরা বলেছিলাম, ওই কেন্দ্রটি অনেক দূরে। তখন ওরা জানতে চায়, কাছাকাছি কোথাও এসওজি-র প্রশিক্ষণ শিবির আছে কি না।” সন্দেহ হওয়ায় শিবিরের খোঁজ দিতে অস্বীকার করেন ওখানে উপস্থিত পুলিশেরা।
“তখনও বুঝিনি, ওরা সেনার পোশাক পরা জঙ্গি। আমাদের আপত্তি শুনে ওরা নিজেদের মধ্যে একটু চোখের ইশারা করল শুধু। আর মুহূর্তের মধ্যে বন্দুক বার করে গুলি চালিয়ে দিল থানার দ্বাররক্ষীর দিকে। সঙ্গে জেহাদি স্লোগান। আবার গুলি। চোখের নিমেষে একাধিক গুলিতে এ-ফোঁড় ও-ফোঁড় হয়ে গেল আমার সহকর্মীদের শরীর। হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম আমি। প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলাম।” বললেন আশুতোষ। জানালেন, প্রাণ বাঁচাতে সঙ্গে সঙ্গে শৌচালয়ের ভিতরে লুকিয়ে পড়েন তিনি। বললেন, “ওদের প্রত্যেকের কাছে খান কুড়ি করে গ্রেনেড আর দু’-তিনটে এ কে রাইফেল ছিল। ওই তাণ্ডবের সময়ে পাল্টা হানায় গেলে আরও বেশি হিংস্র হয়ে উঠত ওরা। থানার ভিতর প্রতিটা ঘরে গিয়ে আরও লোক মারত।”
এখানেই শেষ নয়। আশুতোষ জানান, থানার বাইরে একটি ট্রাক দাঁড়িয়েছিল। গুলিগোলার আওয়াজ পেয়ে তার চালক ভিতরে দেখতে আসেন, কী হয়েছে। তাঁর দিকে জঙ্গিরা বন্দুক তাক করতেই তিনি চিৎকার করে ওঠেন, “আমি পুলিশ নই! ট্রাক চালাই!” জঙ্গিরা হুকুম করে, তখনই ট্রাকে করে তাদের নিয়ে পালাতে হবে। চালক রাজি হলেও, আপত্তি জানান ট্রাকের খালাসি। ফের গুলির শব্দ। থানা থেকে ৫০ গজ দূরে তাঁর মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় জঙ্গিদের গুলি।
আশুতোষ বললেন, “এর পরেই চালককে সঙ্গে নিয়ে ট্রাকের সামনে চেপে বসে এক জঙ্গি। বাকি দু’জন পিছনে। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে চোখের আড়ালে চলে গেল ট্রাকটা। পড়ে থাকল গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া মৃতদেহগুলো।”
পরে তিনি জানতে পারেন, ওই ট্রাকে করেই পাঠানকোট-জম্মু সড়কপথ ধরে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তারা গিয়ে হামলা চালায় সাম্বা জেলার সেনা শিবিরে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.