উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে দুই ফিল্ম
সিটিতে পর্যটন কেন্দ্রও চায় রাজ্য
লচ্চিত্র শিল্পের পরিকাঠামো নির্মাণ, সঙ্গে পর্যটনের নতুন গন্তব্য তৈরি। এই জোড়া লক্ষ্য সামনে রেখেই উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে দু’টি ফিল্ম সিটির প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রের খবর, হায়দরাবাদের কাছে রামোজি ফিল্ম সিটি-ই এই পরিকল্পনার প্রেরণা। এর আদলেই নতুন দু’টি প্রকল্প করতে চায় রাজ্য। ছ’মাসের মধ্যে প্রকল্পের রূপরেখা জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই দু’টি প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ডাবগ্রামে প্রায় ৮৫ একর জমি বরাদ্দ হয়েছে। হুগলির উত্তরপাড়ায় গঙ্গার পাড়ে জমির পরিমাণ ৮০ একর। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেই প্রকল্প দু’টি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। জমি দেওয়ার বাইরে কোনও আর্থিক দায় রাজ্যের থাকবে না। অন্য দিকে জমির দীর্ঘমেয়াদি লিজ ও বিভিন্ন করের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে নিয়মিত টাকা আসার পথও খোলা থাকবে। পর্যটন সেই রোজগারের সুযোগ আর এক ধাপ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে এগোনোর লক্ষ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করছে একটি পরামর্শদাতা সংস্থা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে আগ্রহী লগ্নিকারীদের কাছে দরপত্র চাওয়া হবে। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুর পরে দু’বছর নজরদারিও করবে পরামর্শদাতা সংস্থাটি।
ক্ষমতায় আসার পর চলচ্চিত্র পরিকাঠামো নির্মাণে গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনোদন শিল্প সংক্রান্ত সম্মেলন ‘ফিকি ফ্রেমস’ ২০১১-এই প্রথম কলকাতায় পা রাখে। যশ চোপড়া, প্রসেনজিৎ-সহ বলিউড ও টলিউডের প্রতিনিধিদের সামনেই সে দিন মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ছবির পরিকাঠামোগত খামতি দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন, এই দুই প্রকল্প রূপায়িত হলে মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি কিছুটা হলেও বাস্তবায়িত হবে।
তবে প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পথে এখনও কিছু কিছু বাধা কাটেনি। বিশেষ করে উত্তরপাড়ায় ফিল্ম সিটি গড়ার প্রচেষ্টা পদে পদে হোঁচট খেয়েছে। কলকাতা পুরসভার এই জমি বহু দিন ধরে পড়ে। ফাঁকা জমিতে ইটভাটা থেকে শুরু করে মন্দির, মাদ্রাসা, ছোটখাটো কারখানা অনেক কিছুই গড়ে উঠেছে। এ ছাড়াও রয়েছে ৮০টি আদিবাসী পরিবারের বসতি। স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়েছে জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের সমস্যা। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, এ সব বাধা কাটিয়ে সফল হবে প্রকল্প।
কী কী থাকবে এই প্রকল্পে?
ফিল্ম স্কুল, স্টুডিও, শ্যুটিং করার জায়গা, সম্পাদনা-সহ বিভিন্ন শ্যুটিং পরবর্তী কাজ অর্থাৎ ছবি তৈরির সব রকম ব্যবস্থা থাকবে এই দুই প্রকল্পে। রামোজি ফিল্ম সিটির বিজ্ঞাপনে যেমন বলা হয় হাতে স্ক্রিপ্ট নিয়ে ঢুকে আস্ত চলচ্চিত্র নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন পরিচালকরা। অবশ্য রামোজির এই প্রকল্পটি গড়ে উঠেছে দেড় হাজার একরের বেশি জমিতে। দেশি-বিদেশি, সব প্রযোজনা সংস্থাই এখানে চলচ্চিত্র তৈরি করে থাকে। উত্তরপাড়া ও ডাবগ্রামের প্রকল্প দু’টি সেই তুলনায় নেহাত ছোট হলেও, চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছে জনপ্রিয় হবে বলে রাজ্য আশাবাদী। সিনেমা সংক্রান্ত পরিকাঠামো ছাড়াও রামোজি ফিল্ম সিটিতে রয়েছে হোটেল, হাসপাতাল-সহ নানা পরিকাঠামোও। লাভের মুখ দেখতে শুধু চলচ্চিত্র তৈরির উপর ভরসা না করে পর্যটক টানার পথও খুলে রেখেছে এই ফিল্ম সিটি। গোটা বছর জুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে এখানে। শ্যুটিং দেখার সুযোগ থেকে শুরু করে গোটা ফিল্ম সিটি ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে বিভিন্ন প্যাকেজ। ডাবগ্রাম ও উত্তরপাড়ায় একই ধরনের পরিকাঠামো গড়তে চায় রাজ্য। তৈরি হবে হোটেল, ক্লাব, রেস্তোঁরা। পর্যটকদের জন্য থাকবে নানা প্যাকেজ। তবে একটি শর্ত রাখতে চায় রাজ্য সরকার। ফিল্ম-সংক্রান্ত পরিকাঠামোর বাইরে হোটেল বা আবাসন বানাতে ৬০ শতাংশের বেশি জমি ব্যবহার করতে পারবে না বেসরকারি সংস্থা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.