রাজ্যের শিক্ষা দফতর থেকে প্রায় দুবছর আগে অনুমোদন পাওয়ার পরেও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ১০ বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কোর্সগুলি হল, অ্যনিমেশন সায়েন্স, কমিউনিকেটিভ ইংরেজি, ফিশারি ও অ্যাকোয়িটক সায়েন্স, মাল্টি মিডিয়া ডেভলপমেন্ট টেকনোলজি, হসপিটাল সায়েন্স, প্যারা মেডিক্যাল টেকনোলজি। শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ রুমের অভাবে নতুন দশটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা যাচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কবে এই ১০ টি বিষয়ে চালু হবে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ জানেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য বলেন, “২০১২ সালের ২ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের শেষ বৈঠক হয়েছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বৈঠক হচ্ছে না। কাউন্সিলের বৈঠক ছাডা এই ১০ টি বিষয় স্নাতকোত্তর কোর্স কি করে চালু করব। রাজ্যের শিক্ষা দফতর নতুন যে দশটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স পড়ানোর জন্য অনুমোদন দিয়েছে। সেই দশটি বিষয় পড়ানোর মতো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোন ক্লাশ রুম নেই। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষা দফতর ১০ বিষয়ের পাঠ্যক্রম চালু করতে প্রতিটি বিষয়ে একজন করে অ্যসিস্টেন্ট প্রফেসর নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু কিভাবে ওই বিষয়গুলির শিক্ষক নিয়োগ করা হবে সে ব্যাপারে সুস্পস্ট কোন নির্দেশ পাইনি। ফলে অনুমোদন পাওয়ার পরেও নতুন ১০ বিষয়ের স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করতে পারছি না।” বর্তমান গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য বিভাগে ১৪ টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে প্রায় ১৪০০ ছাত্রছাত্রী পড়ছেন। বর্তমানে ১৪ টি বিষয়ে শিক্ষক রয়েছে ৬৩ জন। এখন পযর্ন্ত ওই ১৪ টি বিষয়ে ৪০ টি শিক্ষকের পদ শূন্য। পাশাপাশি শিক্ষাকর্মী পদে ২২ টি পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মোট ২৯ টি ভবন তৈরি হওয়ার কথা। এখন পযর্ন্ত মাত্র চারটি ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। দুটি ভবনের কাজ চলছে। ফলে নতুন ভবন তৈরির কাজ শেষ না হওয়া পযর্ন্ত নতুন বিষয়ের স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা কোনভাবেই যে সম্ভব নয় তা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরা জানান। বিশ্ববিদ্যলায়ের কর্মসমিতির সদস্য দুলাল ঘোষ বলেন, “পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাবে অনুমোদন পাওয়ার পরেও ১০টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়নি। উপাচার্য দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে সমস্ত কাজ থমকে গিয়েছে। তিনি বলেন, “অনেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের কাজ শেষ করে নতুন স্নাতকোত্তর বিষয় চালু করা যেত।” এ ব্যাপারে প্রাক্তন উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাস বলেন, “আমি অনেক কাজ করতে চেয়েছিলাম। কাউন্সিলের সদস্যরা আমাকে কোনও কাজ করতে দেননি। কিছু করতে গেলে কাউন্সিলরসদস্যরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নালিশ করেছেন। ওঁদের জন্যই দশটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করতে পারিনি।” |