ওষুধ কেনার উপর বীরভূমের জেলা স্বাস্থ্য-কর্তার নিয়ন্ত্রণের আঁচ লাগল জননী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন জেলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেলেও ওই নির্দেশিকা জারি করে থাকা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্ত্তিক মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “কিছু বলব না।”
সম্প্রতি বীরভূমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নির্দেশ দিয়ে জেলার ১৯টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, একটি গ্রামীণ, দু’টি মহকুমা এবং জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, তাঁর আগাম অনুমতি ছাড়া ওই প্রকল্পে ওষুধ কেনা যাবে না। এর কারণ নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে ব্যাখ্যা না দিলেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ওষুধ কেনার খরচ বেড়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে জেলার সরকারি চিকিৎসক মহলে। বোলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ সব্যসাচী রায়ের দাবি, “দুই প্রসূতিকে আপৎকালীন ভিত্তিতে ইঞ্জেকশন দেওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু আমাদের কাছে ওই দু’টি ইঞ্জেকশন ছিল না। নয়া নির্দেশিকার কথা মাথায় রেখে শেষে বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং সিউড়ি সদর হাসপাতালের সুপারদের অনুরোধ করে ইঞ্জেকশন দু’টি জোগাড় করে আনি।”
তাঁর সুরেই প্রশ্ন তুলেছেন অন্য চিকিৎসকেরাও। তাঁদের প্রশ্ন, “কখন কোন রোগীর কী ওষুধ প্রয়োজন হবে আগাম বুঝব কী করে? তা হলে আগাম অনুমতিই বা কী ভাবে নেব?” স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ রয়েছে, রাজ্যের সমস্ত ব্লক, গ্রামীণ, মহকুমা ও বড় হাসপাতালে প্রসূতি ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য ওই প্রকল্পে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ওষুধ না পাওয়া গেলে স্থানীয় দোকান থেকে তাঁরা ওষুধটি কিনতে পারবেন। সেই টাকা অনুমোদন দেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিকে সেই টাকা পেতে বিলম্ব হওয়ায় বিভিন্ন ওষুধের দোকানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির বহু টাকা ধার রয়ে গিয়েছে। যার ওষুধ ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, টাকা শোধ না করলে ওষুধ দেওয়া আর সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে ওই প্রকল্প নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে বীরভূমে। নাস্তানাবুদ হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও হাসপাতালের কর্তারা। |