পুরসভার বাজেট অনুমোদনে বিতর্ক অব্যাহত শিলিগুড়িতে
৭ আসনের পুরসভায় ১৪-০ ভোটে অনুমোদিত হল ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরের ‘বিলম্বিত’ বাজেট। বাজেট বিতর্ক পিছু ছাড়ল না পুরসভার। তৃণমূল কাউন্সিলরদের অভিযোগ, তাঁদের অনুপস্থিতিতে ভোটাভুটি করে বাজেট অনুমোদন করানো হয়েছে। যে বৈঠকের গোড়া ৪৪ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন, সেখানে মাত্র ১৪ জনের ভোটে বাজেট পাস হতে পারে না। সে জন্য বাজেট পাসে আপত্তি জানিয়ে সভার চেয়ারপার্সন তথা ডেপুটি মেয়র সবিতা অগ্রবালকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলররা।
শিলিগুড়ি পুরসভায় বাজেট বিতর্কে উপস্থিত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী
তথা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
বুধবারের বাজেট বিতর্কে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা পুরসভার তৃণমূলের পরিষদীয় দলনেতা গৌতম দেব। তবে অন্য কাজের জন্য সময়াভাবে সভা শুরুর কিছুক্ষণ পরে চলে যান তিনি। তিনি এ দিনের আলোচনায় শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থাকলে পরিস্থিতি কী হতো তা নিয়েও বিতর্ক চলছে পুরসভার অন্দরে। তাই গোটা বাজেট পাসের ব্যাপারটি ‘সাজানো’ বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম। পক্ষান্তরে, বামেরা বাজেট ভোটাভুটি বয়কট করে কংগ্রেসকে সুবিধে করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরদের।
২৩ মার্চের বাজেট নিয়ে বিতর্ক থাকায় ফের ২৩ সেপ্টেম্বর বাজেট পেশ করেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। এ দিন ছিল তা নিয়েই বিতর্ক। সাড়ে ১০ টা নাগাদ শুরু হয় বাজেট নিয়ে আলোচনা। প্রথম বক্তব্য পেশ করেন বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, “বাজেট জনবিরোধী। কোন উন্নয়নের দিশা নেই এই বাজেটে। ২৩ মার্চ পর্যন্ত জোটে থাকা কংগ্রেস ও তৃণমূল যে বাজেট করেছিল তা শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের কাছে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি।” নুরুলবাবুর বক্তব্যের পরেই চলে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি সভা কক্ষের বাইরে বেরিয়ে দাবি করেন, “২৩ মার্চ আমরা ওই দিশাহীন বাজেটের বিরোধিতা করেছি, একই বাজেট ২৩ সেপ্টেম্বর ফের পেশ করা হয়েছে। আমরা কোন ভাবেই তা সমর্থন করব না।” তাঁর অভিযোগ, “পুরসভা কাজ করতে পারছে না। তাই আমরা অন্য দফতর থেকে কাজ করে উন্নয়ন করব।”
পাশাপাশি এদিন বাজেট শুরু থেকেই চলে বিতর্ক। এদিন সভাতে ঢুকেই তৃণমূলের প্রশ্ন, বক্তব্য রাখার জন্য তাঁরা কতটুকু সময় পাবেন তা জানা নেই, বিভিন্ন দলের কাউন্সিলরদের বলার সময়ই সভা ছেড়ে যান তাঁরা। তৃণমূলের তরফে কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “আমি যখন বলছিলাম তখন মেয়র তা শুনছিলেন না, তাই আমরা সভা ছেড়ে চলে আসি। তবে নির্দিষ্ট সময়ে জবাবী ভাষণ শুনতে যাব বলে জানিয়েছিলাম। নির্ধারিত সময়ে জবাবী ভাষণ শুরু হয়নি। আমরা বাইরে ছিলাম। এর পরে গিয়ে দেখি হঠাত্‌ কংগ্রেসের কাউন্সিলররা ভোটে বাজেট পাস হয়েছে বলে দাবি জানিয়ে সভা শেষ করে দিয়েছেন। এটা বেআইনি।”
ঘটনা হল, বাজেট আলোচনা শেষ হওয়ার পর চেয়ারম্যান জানান, এক ঘন্টা পর অর্থাত্‌ তিনটের সময় শুরু হবে জবাবী ভাষণ। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে তৃণমূল কাউন্সিলর গেলে চেয়ারম্যান, মেয়র কেউ উপস্থিত ছিলেন না সভাকক্ষে। যাননি বাম কাউন্সিলররা। প্রায় ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর সভাকক্ষ থেকে চলে যায় তৃণমূল। ফের সাড়ে তিনটে নাগাদ আসেন তাঁরা। পৌনে ৪টে নাগাদ যান বাম কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যান, মেয়র। আর তা নিয়েই প্রশ্ন করেন কৃষ্ণ পাল। তিনি বলেন, “বামেরা না আসায় কংগ্রেস অপেক্ষা করছিল। জবাবি ভাষণ না শুনে তাঁরা ভোটাভুটি দাবি করেন।” দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান জানান, আসতে দেরি হবে তা তিনি ফোনে জানিয়েছিলেন। মেয়র জবাবি ভাষণ শেষ করতেই বাজেটের বিরোধিতা করে সভা বয়কট করেন বামেরা। বাজেট পাস নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভোটাভুটি করা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান।
একঘন্টা সময় চেয়ে সভাকক্ষ ছেড়ে যান তৃণমূল কাউন্সিলররা। উপস্থিত কংগ্রেসের ১৪ কাউন্সিলর বাজেটের সমর্থনে ভোট দেন। বাজেট পাস হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান। তবে বাজেট পাস আইন মেনে হয় নি বলে দাবি করেন তৃণমূল। সবিতা অগ্রবাল বলেন, “আমরা যা করেছি আইন মেনে করেছি। সমস্ত কিছু রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেব। তৃণমূল ভোট না দিয়ে চলে গিয়েছে।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের দাবি, “আগে নান্টু পাল যদি ১৫ জনের ভোটে বাজেট পাস হয়নি জানাতে পারেন , তবে আজ কেন ১৪ জনের সমর্থনে বাজেট পাস হবে না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.