কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের শহর সভাপতি মনোজ সরকার ও তাঁর সঙ্গীরা শান্তিপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করলেন। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চয়ন ভট্টাচার্য চার ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে ছিলেন। এই ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্তর্বিবাদ।
মনোজাববুর অভিযোগ, “সংগঠনের কলেজ ইউনিটের সভাপতি হাসিবুল শেখ ও তাঁর দলবলের চাপে পড়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোনও কাউন্সেলিং ছাড়াই বুধবার ৮০ জনকে ভর্তি নিয়েছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেছিলাম।” হাসিবুল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “মেধার ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তি হয়েছে। দলের অনুমোদন নিয়েই আলোচনার মাধ্যমে এই তালিকা তৈরি করা হয়।”
শান্তিপুর কলেজে ভর্তি নিয়ে এর আগেও বিতর্ক হয়েছে। মাস খানেক আগে অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন নিজেরাই ভর্তির আবেদনপত্র ছাপিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে তা বিলি করেছিল। ভর্তি সংক্রান্ত এই বিতর্ক প্রসঙ্গে চয়নবাবু বলেন, “টিএমসিপির তরফে আমাকে ১৮১ জনের একটা নামের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তিনি আমাকে ৮০ জনকে ভর্তি নিতে বলেছিলেন। সেই মতো তাদের ভর্তি করা হয়েছে।” কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জুড়ানকৃষ্ণ সরখেল বলেন, “কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ। তবে বুধবার শান্তিপুর কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে কী ভাবে নেওয়া হল ও তা নিয়ে কী কী ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” চয়নবাবু অবশ্য বলেন, “আমি যতদূর জানি ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। কারণ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব কে নেবেন, তা নিয়ে বিতর্কের জেরে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুই হয়েছে এক মাস পরে। ভর্তি দেরিতে শুরু হওয়ায় শেষ হতেও দেরি হচ্ছে।”
কলেজের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের পার্থসারথী বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পত্রপাঠ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “আমি ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করি না। অধ্যক্ষ মিথ্যা বলছেন। কিছু ছাত্রের কথা শুনে অধ্যক্ষ নিজের মতো করে ছাত্র ভর্তি নিয়েছেন। কোনও পড়ুয়া রেজিস্ট্রেশন না পেলে তার দায় বর্তাবে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।” পার্থসারথীবাবু জানিয়েছেন, “এই ঘটনার সঙ্গে টিএমসিপি-র কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আর টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি জয়ন্ত পাল বলেন, “যারা ঘেরাও করছে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। সংগঠন ঘেরাও অনুমোদন করে না।” |