|
|
|
|
কংগ্রেস নেতাকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন জেল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
গোপীবল্লভপুরের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রমেশ পট্টনায়েককে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল এক ব্যক্তির। বুধবার ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী এই সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত বছর বিয়াল্লিশের লক্ষ্মণ মুর্মুর বাড়ি গোপীবল্লভপুর থানার শালগেড়িয়া গ্রামে।
ঝাড়গ্রাম দায়রা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি প্রশান্ত রায় জানান, এগারো বছর আগে ২০০২ সালের ২৯ নভেম্বর গোপীবল্লভপুরের মুন্সিডাঙায় খুন হন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি বছর বাহাত্তরের রমেশবাবু। রমেশবাবুর ইটভাটার ব্যবসা ছিল। মুন্সিডাঙায় একটি ইটভাটার মালিক ছিলেন তিনি। ঘটনার দিন সকালে নিজের ইটভাটার সামনে লরি থেকে কয়লা ও মাটি নামানোর তদারক করছিলেন তিনি। আচমকা অন্য একটি ইটভাটার ঠিকা শ্রমিক লক্ষ্মণ মুর্মু রমেশবাবুকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। ভাটায় কর্মরত শ্রমিকেরা লক্ষ্মণকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। রমেশবাবুর ছেলে বড় ছেলে অশোক পট্টনায়েকের অভিযোগের ভিত্তিতে লক্ষ্মণ মুর্মুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় সিপিএম জড়িত বলে অভিযোগ করেছিল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। যদিও রমেশবাবুর পরিজনেরা দাবি করেছিলেন, ব্যবসায়িক রেষারেষির কারণেই রমেশবাবুকে পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ নিদিষ্ট সময়ে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে চার্জশিট জমা না-দেওয়ায় তিন মাস পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান লক্ষ্মণ।
তারপর ২০০৪ সালের ১৯ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ব্যক্তিগত কারণেই রমেশবাবু খুন হন। ২০০৬ সালের ২৬ এপ্রিল ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে মামলাটির বিচার শুরু হয়। কিন্তু সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে হাজির না হওয়ায় লক্ষ্মণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন সন্দেহভাজন অভিযুক্ত হিসেবে গোপীবল্লভপুরেরই অন্য একটি ইটভাটার মালিক-সহ তিন জনের নাম উঠে আসে। ওই তিন জনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস জারি করেন ঝাড়গ্রাম দায়রা আদালতের বিচারক। কিন্তু তাঁরা ওই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোটের দ্বারস্থ হন তাঁরা। হাইকোট নিম্ন আদালতের নোটিসটিকে বহাল রাখে। এরপর ওই তিনজন সুপ্রিম কোর্টে যান। তাঁদের নাম এফআইআর-এ না থাকায় নোটিসটি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
জেলবন্দি অভিযুক্ত লক্ষ্মণ মুর্মুকেই দোষী সাব্যস্ত করে বুধবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন বিচারক। |
|
|
|
|
|