পুজোর চার দিন না হয় মেট্রোর সংখ্যা বেড়ে হবে প্রায় দ্বিগুণ। পরিষেবার সময়ের পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে টিকিটের কাউন্টারও। কিন্তু তাতে লাভ কী!
এখন থেকেই মেট্রোয় যাতায়াত করতে গিয়ে রীতিমতো অতিষ্ঠ নিত্যযাত্রীরা। অভিযোগ, দুপুরের পর থেকে এক বারের চেষ্টায় প্রতিটি ট্রেনের দরজাও বন্ধ করতে পারছেন না মোটরম্যান। মেট্রো-কর্তাদের বক্তব্য, পুজোর কেনাকাটার ভিড়ের জন্যই এমন অবস্থা। আর এই কারণেই নিত্যযাত্রীদের হাঁসফাঁস অবস্থা।
মেট্রো সূত্রের খবর, গত সপ্তাহ থেকেই মেট্রোর ভিড় হঠাৎ খুব বেড়ে গিয়েছে। এর কারণ কী? মেট্রো-কর্তাদের বক্তব্য, এমনিতে রাস্তায় বাস কমেছে। কমেছে অটো আর ট্রামের সংখ্যাও। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোদের তাপ। ফলে আশ্বিনেও রয়ে গিয়েছে ভ্যাপসা গরম। নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের। এ অবস্থায় সব চেয়ে কম ভাড়ায় স্বস্তির যাত্রার ব্যবস্থা হিসেবে মেট্রোকেই বেছে নিচ্ছেন শহরবাসী। আর তার জেরেই মেট্রোয় এই জনবিস্ফোরণ। এর পাশাপাশি চলছে পরিষেবার সমস্যাও। কিছু যাত্রীর অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই বাতিল হয়ে যাচ্ছে ট্রেন। যার জেরে ভিড় বাড়ছে পরের ট্রেনে। এর জন্য পরিকাঠামোগত ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন মেট্রোর অফিসারদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অধিকাংশ রেক অনেক পুরনো। মাঝেমধ্যেই সেগুলি খারাপ হয়ে যায়। তখন ট্রেন বাতিল না করে উপায় থাকে না।
এখন কত বেড়েছে যাত্রী-সংখ্যা? |
মেট্রো সূত্রে খবর, রবিবারের ছুটির দিনেও যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৭ লক্ষ ৪৬ হাজার। সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ লক্ষ ৫৩ হাজার। যা সর্বকালীন রেকর্ড বলে দাবি এক মেট্রোকর্তার। গত বছরের তুলনায় এ বছর শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই মেট্রোর আয় বেড়েছে ১৭.৬৪ শতাংশ। পুজোর সময়ে ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে মেট্রোকর্তাদের ধারণা। কিন্তু মেট্রোর পরিকাঠামোর যা হাল, তাতে পুজোর সময়ে ওই বাড়তি ভিড় সামালানো যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান মেট্রো-কর্তাদের একাংশই। তাঁদের আশঙ্কা, মেট্রোর ভাঁড়ারের যা অবস্থা, তাতে ভাড়া না বাড়ালে অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হবে। অবিলম্বে পরিকাঠামোর উন্নতি প্রয়োজন। ভাড়া না বাড়ালে সেই টাকা আসবে কোথা থেকে? প্রশ্ন তাঁদের।
এই অবস্থায় পুজোর বাড়তি ভিড় সামলানো যে খুব হতে পারে, তা অবশ্য মানতে চাননি মেট্রো-কর্তারা। মেট্রো-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পুজোয় ট্রেনও চলবে বেশি। আর নিত্যযাত্রীরা সেই সময়ে থাকছেন না। ফলে দু’রকম ভিড়ের জের এক সঙ্গে থাকবে না। যা এখন হচ্ছে। পুজোর কেনাকাটা করতে যাওয়া যাত্রী ও নিত্যযাত্রীর ভিড় মিশেই এখন এমন অবস্থা হচ্ছে। মেট্রোর দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য জনসংযোগ অধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “পুজোর চার দিনে মোট ৬১৪টি অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে। সকাল থেকে ট্রেন চলবে যথাক্রমে ৭ মিনিট, ১০ মিনিট ও ১৫ মিনিট অন্তর।” যাত্রীদের কোথাও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হবে না বলেও তাঁর দাবি। এ ছাড়া মেট্রো-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বাইরে টিকিট কাটার জন্য অতিরিক্ত ১৪৪টি টিকিট কাউন্টার খোলা থাকছে। তার সঙ্গে ভিড় বুঝে আরও কাউন্টার বাড়ানো হবে। ৮২টি গেট খোলা থাকবে মেট্রো স্টেশনে ঢোকা ও বেরোনোর জন্য। সব মিলিয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, পুজোর ভিড় সামাল দিতে তৈরি মেট্রো। |