এলাকার খাদান থেকে রাজস্ব আদায় করে প্রশাসন। জেলা পরিষদ রাস্তায় পাথর বোঝাই গাড়ি থেকে টোল আদায় করছে। এ ছাড়াও দৈনিক গাড়ি পিছু টাকা আদায় করে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। সব মিলিয়ে প্রতি বছর সরকারের ঘরে ভালই টাকা জমা পড়ে। কিন্তু জেলা প্রশাসন পাথর শিল্পাঞ্চলে রাস্তা সংস্কারে কোনও সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, খাদান থেকে বছরে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে প্রশাসন। রাস্তার উপর টোল বসিয়ে জেলাপরিষদ পাথর বোঝাই গাড়ি পিছু ৭৫ টাকা আদায় করছে। দৈনিক প্রতি গাড়ি পিছু ২২৫ টাকা আদায় করছে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর।
শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির অভিযোগ, জেলা পরিষদের তরফে যেখানে টোল আদায় করা হচ্ছে, ওই রাস্তা পূর্ত (সড়ক) দফতরের অধীনে। এ ব্যাপারে তাঁরা আগের সভাধিপতির কাছে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। নতুন সভাধিপতির কাছে ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন। |
এমনই হাল শালবাদরা যাওয়ার রাস্তার। ছবিটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন। |
পাথর শিল্পাঞ্চলের রাস্তার বেহাল অবস্থা সরেজমিন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিরাজ শেখ, হাজি মহম্মদ সোহরাব, সহ-সম্পাদক সন্তোষ গুপ্তদের অভিযোগ, “৬০ নম্বর রানিগঞ্জ মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের উপর মল্লারপুর আম্বা মোড় থেকে কাষ্ঠগড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত রাস্তা (প্রায় ৬ কিলোমিটার) পূর্ত (সড়ক) দপ্তরের অধীন। বাকি ঠাকুরপুরা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার রাস্তা জেলা পরিষদের অধীনে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে জেলাপরিষদ পাঁচ বছরের বেশি সময় হল রাস্তাটি তৈরি করে। অথচ এই ১৩ কিলোমিটার রাস্তা থেকে টোল আদায় না করে, আম্বা মোড় থেকে কাষ্ঠগড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত রাস্তা থেকে টোল আদায় করছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।” শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি শক্তিপদ চক্রবর্তী এবং সম্পাদক বরুণ রায়ের দাবি, “আমরা সরকারকে টোল থেকে রাজস্ব সব কিছু দিয়ে আসছি। অথচ রাস্তা সংস্কারে তাদের সদর্থক ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে না। উল্টে পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষ থেকে রাস্তা সংস্কার করা হয়। কিন্তু বর্তমানে রাস্তায় পাথর বলতে আর কিছু নেই।”
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) বিধান রায় বলেন, “টোল আদায়ের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় নির্মিত রাস্তাটি কতদিন আগে তৈরি হয়েছে, সে ব্যপারে খোঁজ নেব। যদি পাঁচ বছর আগে নির্মাণ হয়ে থাকে, তা হলে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলব।” অন্য দিকে পূর্ত দফতরের (সড়ক) মল্লারপুর সাব ডিভিশন্যালের সহকারী বাস্তুকার নাসিরুল হক বলেন, “আমদের তো টোল আদায়ের কোনও নিয়ম নেই। জেলাপরিষদকেও বলেছিলাম।” জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “পূর্ত (সড়ক) দফতরের রাস্তায় জেলাপরিষদ টোল আদায় করছে, এরকম জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় নির্মিত যে রাস্তাগুলি খারাপ হয়ে গিয়েছে, সেগুলি অবিলম্বে সংস্কারের জন্য মনিটারিং কমিটিতে আলোচনা করা হয়েছে।” |