মার্কিন নজরদারি থেকে রেহাই পায়নি ভারতীয় কূটনীতির প্রাণকেন্দ্রও।
দেশের বাইরে ভারতীয় কূটনীতির সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি প্রতিষ্ঠানের সব কম্পিউটারের তথ্য চলে এসেছে আমেরিকার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনএসএ) হাতে এমনই দাবি একটি ভারতীয় সংবাদপত্রের। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের ভারতীয় দফতর ও ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসও এনএসএ-র লক্ষ্য ছিল। সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ওই দুই গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সব কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক কপি করে নিয়েছে এনএসএ। এনএসএ-রই একটি অতি গোপনীয় নথি থেকে ওই কাগজ এ সব তথ্য জানতে পেরেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের ভারতীয় দফতর এবং দূতাবাসের কম্পিউটারগুলি মার্কিন হানার লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেওয়া হয় যাতে এখানকার ই মেল, টেলিফোন, দফতর সংক্রান্ত কথাবার্তা, ও সরকারি নথি সব আমেরিকার নজরে আসে। গত জুনে বিভিন্ন দেশে এনএসএ-র নজরদারির বিষয়টি এনএসএ-রই প্রাক্তন কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছিলেন, সন্ত্রাসবাদী হামলা ঠেকাতেই এই তৎপরতা। কিন্তু আমেরিকার এই কাজে অসন্তোষ দেখান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফের মতো বেশ কয়েক জন রাষ্ট্রনেতা। নয়াদিল্লি অবশ্য বিশ্বজোড়া ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ও টেলিফোনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি চালানোর ব্যাপারে নেতিবাচক কিছু বলেনি। বরং সন্ত্রাস ঠেকাতে এ ধরনের খোঁজখবর করা প্রয়োজন বলে মনে করছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু ভারতের কূটনৈতিক ক্ষেত্রে মার্কিন নজরদারি চালানো হচ্ছে, এই খবর জুলাই মাসে জানার পরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু খাস নিউ ইয়র্কেই রাষ্ট্রপুঞ্জের ভারতীয় দফতর বা ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসেও মার্কিন নজরদারি চলছে, এ খবর ছিল না ভারতের কাছে। এই নজরদারির ফলে যে বিপুল তথ্য আমেরিকার হাতে চলে গিয়েছে, তা জানতে পেরে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন কূটনৈতিক অফিসার। তাঁরা বলছেন, “এর ফলে কত বড় রকমের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে কেউ জানে না।”
ভারতের ওই দুই ভবনে নজরদারি চালানোর কারণ কী? ওই দু’টি জায়গা থেকে তো সন্ত্রাসের সম্ভাবনা নেই? ওই সংবাদপত্র প্রশ্ন করেছিল আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা দফতরের ডিরেক্টরকে। যার উত্তরে তিনি বলেন, “মার্কিন প্রশাসন কূটনৈতিক স্তরে এ ব্যাপারে যা বলার বলবে। প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।” ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস মার্কিন কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। মার্কিন প্রশাসন অবশ্য, বিদেশের কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নজরদারি চালানোর জন্য ক্ষমা চাইতে নারাজ। |