মধুবালা আর ডান্সিং ফ্রকেই জাদু |
সুশান্ত বণিক ও অর্পিতা মজুমদার • দুর্গাপুর |
পুজো মানেই ছুটি, গল্প, খেলা, খাওয়াদাওয়া আর অবশ্যই নিত্য নতুন জামাকাপড়। বড়দের কাছে পুরোটা এরকম না হলেও খুদেদের কাছে পুজো কিন্তু এটাই। মণ্ডপে মা দুগ্গার সামনে কে বসবে আর অষ্টমীর অঞ্জলীতে কার ছোঁড়া ফুল সবচেয়ে দূরে যাবে তার লড়াইয়েই পুজোর আসল মজা।
তবে এখন খুদেদের পুজো অনেকটাই বদলেছে। পুজোর চার দিনেও পুরোপুরি ছুটি তাদের জোটে না। তবে একটা জিনিস কিন্তু বদলায় নি। তা হল নতুন জামার আনন্দ। তাই তো পুজোর সাত দিন আগে থেকেই রোজ একবার করে জামাগুলো পরে দেখলে ঠিক মন মানে না। তবে জামা তো আর এক রকম নয়, যত দিন বাড়ছে বড়দের পোশাকের মতো শিশুদের পোশাকেরও তত বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে।
আসানসোল মিশন মোড়ের শিশুদের জামাকাপড়ের এক ব্যবসায়ী অনুপ শর্মা বলেন, “বাচ্চা মেয়েদের পোশাক তো বড়দেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ।” লেহেঙ্গা, ডান্সিং ফ্রক, কালার্ড অ্যাঙ্কেল জিনস্, আমব্রেলা কাট ফ্রক, কালার কেপ্রি, শর্ট লেন্থ রেডিমেড পোশাক এসবই এ বছর বেশি চলছে। এছাড়া রাজস্থানী ধাঁচের কাঁচ লাগানো ঘাগড়া চোলিরও বিক্রি আছে। তবে ছোট ছেলেদের পোশাকে তেমন নতুনত্ব নেই বলে জানালেন আসানসোলের ব্যবসায়ী গোপাল বাজুরিয়া, জয়দীপ খৈতানেরা। তাঁদের মতো, বড়দের মতোই চেক শার্ট, কার্গো প্যান্ট, জিনস্ ও বাবাস্যুট বা ধুতি কুর্তাই চলছে এ বার। বাবা-মায়ের সঙ্গে বাজারে এসেছিল পঞ্চম শ্রেণির স্বর্ণলী দেবনাথ। তার জেদ, “পুজোয় জিনসের টপ চাই।” |
দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে ঘুরেও দেখা গিয়েছে, বাবা-মায়ের সঙ্গে ভিড় করে জামা কিনছে খুদেরা। মেয়েদের শর্ট প্যান্ট সেট, মিনি স্কার্ট, লেগিংস, থ্রি-ইন-ওয়ান, টুয়েলভ-ইন-ওয়ান, সুতির কাজ করা ফ্রক নজর কাড়তে সবার। রয়েছে নানা নামে বড়দের মতো চুড়িদারও। যেমন, রাজশ্রী, মধুবালা। এছাড়া জিনসের ক্যাপ্রি তো সারা বছরের হিট। কিছু দোকানে চোখে পড়ল পুরনো দিনের গ্যালিস রকমারি সাজে ফিরে এসেছে। আর ছেলেদের গতানুগতিক গেঞ্জি, প্যান্ট তো আছেই। টি-শার্টেও এসেছে নানা বৈচিত্র। চেন দেওয়া হুড শেড টি-শার্ট, ন্যারো কাটিং জিন্স ভালই চলছে এ বছর। তবে মেয়েদের জামাকাপড়ের পাশে এর নতুনত্ব অনেকটাই কম। চণ্ডীদাস বাজারে বাজার করতে আসা উৎপল কর বললেন, “মেয়ের তুলনায় ছেলেদের ভ্যারাইটি কম।” দুর্গাপুর বাজারে ছেলে মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে এসেছিলেন নৃপেন সাহা। তিনি বলেন, “মেয়ের জন্য বেলুন টপের সঙ্গে বেলুন স্কার্ট কিনেছি। ছেলের জন্য বাবস্যুট।” বেনাচিতি বাজারের ব্যবসায়ী সুনীল বাদ্যকর জানালেন, ঘাঘরার চাহিদা প্রত্যেক বছরই থাকে। কিন্তু এবার পাথর ও বিড্সের ঘাঘরার চাহিদা বেড়েছে। সিটি সেন্টারের শপিং মলে বাবা মায়ের সঙ্গে বাজার করতে এসেছিল দশ বছরের সুদীপ মলহোত্রা। তার আবার জিন্সের সঙ্গে চেক শার্টই বেশি পছন্দ। সিটি সেন্টারের বিভিন্ন মলেও দেদার বিকোচ্ছে শিশুদের জামাকাপড়। |