টাকার বদলে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল মার্কশিট বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্র পরিষদের মালদহ জেলা সভাপতি বাবুল শেখের বিরুদ্ধে। শম্পারানী ঘোষ নামে এক ছাত্রীর লিখিত ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে। জাল মার্কশিট চক্রের হদিশ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য পাঁচজনের কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ছাত্রী পুলিশের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন, বিএডে ভর্তির জন্য ভুগোল অনার্সের ফাস্ট ক্লাস মার্কশিট পেতে ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি বাবুল শেখকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্র পরিষদ জেলা সভাপতি বাবুল শেখের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁকে গ্রেফতার করা হবে।” এই প্রসঙ্গে ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি বাবুল শেখ বলেন, “আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানি না। অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমি চাই পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত করুক।” তিনি জানান, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পরিষদের প্রভাব নেই। আমাকে অপদস্থ করার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “জাল মার্কশিট বিক্রির অভিযোগে ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি বাবুল শেখকে এখনই গ্রেফতার করতে হবে। আমি যখন ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলাম তখন বাবুল শেখের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি-সহ প্রচুর অভিযোগ আমার কাছে এসেছিল। আমরা ওকে সেই সময় সংগঠন থেকে বার করে দিয়েছিলাম।” উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নুর পরিষ্কার জানিয়েছেন, “অভিযোগ মারাত্মক। যদি তা সত্যি হয়, ওই ব্যক্তিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় ২১টি বিএড কলেজে ভর্তির জন্য ২২ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে কাউন্সিলিং শুরু হয়েছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সের বেশি নম্বরের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিএড কোর্সে মেধা তালিকা তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়। রবিবার সেই তালিকা অনুসারে অভিযোগকারী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। শিক্ষকদের সে সব দেখে সন্দেহ হয়। শিক্ষকদের জেরায় তিনি ভেঙে পড়ে জানান, বাবুলবাবুকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি মার্কশিটটি পেয়েছেন। রাতেই ওই ছাত্রী পুলিশে অভিযোগ জানান। তিনি বলেন, “বিএডে ভর্তির জন্য বাবুল শেখের কাছ থেকে মার্কশিটটি কিনেছিলাম।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য বলেন, “জাল মার্কশিটের বিষয়টি আমাদের নজরে আসতেই পাঁচজনের তদন্ত কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। একাধিক জালমার্কশিট আমাদের হাতে এসেছে। পুলিশে অভিযোগ জানানো হচ্ছে। জাল মার্কশিটের একটি চক্র গড়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে।” গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস বলেন, “ওই ছাত্রী যে মার্কশিট জমা করেছিলেন তা জাল। ওই ছাত্রী ভুগোল অনার্সে ৩৮৪ নম্বর পান। অথচ বিএড কোর্সে ভর্তির জন্য ৯৭ নম্বর বাড়িয়ে তিনি ৪৮১ নম্বরের একটি মার্কশিট দাখিল করেছিলেন। |