কপালে লাল তিলক। মাথা ভর্তি লাল আবির। কেউ পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন। শোনা যাচ্ছে, “দাদা সব আপনার জন্য।”
পরেশ অধিকারী। তাঁর নিজের দল ও বিরোধীরা, সকলেই মনে করছেন, মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশবাবুর সৌজন্যেই মেখলিগঞ্জ পুরসভায় অটুট থাকল লাল দুর্গ। পরেশবাবুর বক্তব্য, “তৃণমূল ভোটের প্রচারে শুধু আমার বদনাম করে বেরিয়েছে। মানুষ তা মেনে নেননি।” কমল গুহের হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছিলেন পরেশবাবু। প্রথম বিধায়ক হন ১৯৯১ সালে। ’৯৬ সালে তিন বিঘা আন্দোলনের সময়ে সমাজবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক নামে কমলবাবু দল গড়লে তাঁর পাশে ছিলেন পরেশবাবু। ২০০১ সালে কমলবাবুর হাত ধরেই ফের পুরনো দলে ফিরে আসেন। আবার বিধায়কও হন। |
গত বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের হাওয়ার মধ্যেও নিজের আসন টিকিয়ে রেখেছিলেন। পেশায় ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তৃণমূল অবশ্য ওই হারের কারণ হিসেবে দলীয় স্তরে তাঁদের সাংগাঠনিক দুর্বলতা এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা জানিয়েছেন। পরেশবাবু যে ভাবে ময়দানে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা তৃণমূলের কোনও নেতা করেননি কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা কোচবিহার জেলার নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “বামফ্রন্ট তথা পরেশ অধিকারীর অর্থ ও বাহুবলের কাছে আমরা হেরেছি।” তৃণমূলের নেতার কথায়, পরেশবাবু সারা বছর এলাকায় থেকে যে ভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশেন, তা অন্য কোনও দলের নেতাদের মধ্যে নেই। কংগ্রেস নেতা মায়াশঙ্কর সিংহ বলেন, “আমরা ১টি আসনে জিতেছি। আরও কয়েকটি আসনে জেতার মতো পরিস্থিতি ছিল। তৃণমূল ভোট কেটে নেওয়াতে তা সম্ভব হয়নি।” তৃণমূলের তরফেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তোলা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল মেখলিগঞ্জে তবু কিছু আসন পেয়েছে। কিন্তু পুরসভায় শেষ হাসি হাসলেন সেই পরেশবাবুই। |